একেবারে শেষবেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠান বাতিলের যে সিদ্ধান্ত সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়েছিলেন, তার সমালোচনায় সরব হল ওই কলেজেরই শিক্ষক সংগঠন। বিবৃতিতে সংগঠন জানিয়েছে, ওই সিদ্ধান্ত কলেজের ভাবমূর্তির সঙ্গে খাপ খায় না এবং ঘটনাটা শিষ্টাচারবিরোধী।
গত ১ অগস্ট সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার আয়োজন করেছিল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের দু’টি সংগঠন। বিষয়বস্তু ছিল, ভারত রূপকল্প। কিন্তু অনুষ্ঠানের দু’দিন আগে তা বাতিলের কথা জানিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন আয়োজকেরা।
বিজেপি-আরএসএসের ষড়যন্ত্রই এর জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁর বক্তব্য ছিল, বিজেপিই চাপ তৈরি করে দিল্লিতে তৃণমূল নেত্রীকে মুখ খুলতে দেয়নি। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষ সে সময়ে কোনও চাপের কাছে মাথা নোয়ানো হয়নি বলে দাবি করেন। কিন্তু আজ যে ভাবে শিক্ষক সংগঠন সরব হয়েছে তাতে ফের এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
গত সোমবার বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক ডাকে শিক্ষক সংগঠন। আজ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নন্দিতা নারাইন জানান, ‘‘যে ভাবে শেষ সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়েছিলেন, তাতে শিক্ষক সংগঠন ক্ষুব্ধ। এই ঘটনায় কলেজের দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য ভাঙা পড়েছে। এমন শিষ্টাচারবিরোধী কাজ কলেজের ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি।’’ তাঁরা আরও বলেছেন,‘‘সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ বরাবরই ক্লাসরুম ও ক্লাসরুমের বাইরে বিতর্ক ও আলোচনাকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। যার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরাও বিভিন্ন মতাদর্শের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। আতিথেয়তা, মুক্ত চিন্তার যে ভাবধারা কলেজ বহন করে এসেছে, তা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সঙ্গে কোনও ভাবেই খাপ খায় না।’’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের অন্তত চিঠি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দুঃখপ্রকাশ করা উচিত ছিল। যে কারণেই অনুষ্ঠান বাতিল করা হোক না কেন, তাতে কলেজের আদৌ সুনাম বৃদ্ধি হয়নি। উল্টে ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।