আদর: স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক সদস্যের সঙ্গে পদুমি দাস। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে।— নিজস্ব চিত্র।
মাত্র ন’মাস বয়সে পিতৃহারা হওয়া বিরোচন দাসকে অনেক কষ্টে বড় করেছিলেন পেশায় শিক্ষিকা পদুমি দাস। ছেলেকে ডাক্তারি পড়ান তিনি। কিন্তু পেশায় সফল হয়ে বিদেশে পাড়ি দেওয়া সেই ছেলেই এখন মায়ের সম্পত্তি হস্তগত করে মাকে ‘ত্যাগ’ করেছেন। বাড়িতে পড়ে গিয়ে হাড় ভাঙার পরে ৮৩ বছরের ওই বৃদ্ধাকে দেখার কেউ ছিল না। খবর পেয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ওই বৃদ্ধার চিকিৎসার ভার নিয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালের বকেয়া মিটিয়ে তাঁকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুয়াহাটির উলুবাড়ির বাসিন্দা পদুমিদেবীকে অনেকদিন আগেই পৃথক করে দিয়েছেন ডাক্তার পুত্র ও পুত্রবধূ। তাঁর বাড়ি ও জমিও নিজেদের নামে করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। গুয়াহাটিতে একাধিক বাড়ি, কুয়েতে ফ্ল্যাট থাকা ওই চিকিৎসক নিজে এক সন্তান-সহ বিদেশেই থাকেন। স্ত্রী ও অন্য সন্তান থাকেন গুয়াহাটিতে। কিন্তু মা পড়ে গিয়ে হাড় ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেও দেখতে আসা দূরের কথা, ছেলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মা মারা গেলেও মৃত্যু সংবাদ তাঁকে দেওয়ার দরকার নেই। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওই বৃদ্ধার দেখভাল করছে। যে বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল, সেখানকার মোটা বিল মেটানোর মতো টাকাও বৃদ্ধার কাছে ছিল না।
আরও পড়ুন: ফের বেলাইন ট্রেন, উদ্বেগ যোগী-রাজ্যে
খবর পেয়ে উদ্যোগী হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ওই বৃদ্ধার চিকিৎসার ব্যবস্থা গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করা হয়েছে। খরচ দেবে সরকার। মন্ত্রীর স্ত্রী নিজে বেসরকারি হাসপাতালের বকেয়া মিটিয়ে দিয়েছেন। আপাতত হাসপাতালের সুপার রমেন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে পদুমিদেবী সেরা চিকিৎসাই পাচ্ছেন। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে পুত্রবধূ হাসপাতালে এলেও পদুমি দেবী জানান, এতদিন যখন মায়ের খবর নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি তাঁরা, এখন আর তার প্রয়োজন নেই। আজ খানিকটা সুস্থ হয়ে ওঠা পদুমি দেবী বলেন, “ছেলেকে একবার দেখতে চাই। শুধু দেখতে।’’
অন্য দিকে, ডিব্রুগড়ের বাসিন্দা প্রকাশ অগ্রবালের ছ’মাস বয়সী ছেলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এখন সে ভেন্টিলেটারে। খরচ চালাতে অপারগ প্রকাশবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে ই-মেল করেছিলেন। মেল পেয়েই ব্যবস্থা নিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। শিশুটির সুচিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।