দিল্লি বিস্ফোরণে ‘জড়িত’ চার চিকিৎসক। — ফাইল চিত্র।
দিল্লি বিস্ফোরণে নাম জড়িয়েছে চার চিকিৎসকের। তাঁরা চার জনই হরিয়ানার আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিযুক্ত ছিলেন। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তঃরাজ্য মেডিক্যাল বোর্ডের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) ছাড়াই অভিযুক্তেরা যোগ দিয়েছেন আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কী ভাবে তাঁরা সেটা করলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই বা কী ভাবে অনুমতি দিলেন, এখন সেগুলিই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
চার চিকিৎসক উমর উন নবি, মুজাম্মিল শাকিল, শাহিন শহিদ, মুজফ্ফর আহমেদ— এই চার জনেরই নাম জড়িয়েছে দিল্লি বিস্ফোরণে। তাঁরা সকলেই ভিন্রাজ্য থেকে এসে চিকিৎসক বা অধ্যাপক হিসাবে হরিয়ানার আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। দেখা গিয়েছে, তাঁদের কারও কাছেই নেই এনওসি।
কেন এনওসি প্রয়োজন?
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)-এর নিয়ম, কোনও চিকিৎসক এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে চলে গেলে তাঁকে পূর্বতন রাজ্যের মেডিক্যাল বোর্ডের এনওসি নিতে হয়। নতুন যে রাজ্যে চিকিৎসক স্থানান্তরিত হন, তাঁকে সেখানকার মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য হতে হয়।
তদন্তকারীদের সূত্র বলছে, দিলি বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্ত চার চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র এক জনই সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন। আদিল আহমেদ রাথর জম্মু ও কাশ্মীর মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে এনওসির আবেদন করেছিলেন এবং তা পেয়েও ছিলেন বলে খবর।
প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে এনওসি ছাড়াই তিন চিকিৎসককে নিয়োগ করেছিল আল-ফালাহ্। বিস্ফোরণে নাম জড়ানোর পরে চার জনেরই চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিল করেছে এনএমসি। দিল্লির নার্সিং হোম এবং হাসপাতালে যে সব চিকিৎসকেরা পাকিস্তান, বাংলাদেশ, চিন, আরব আমিরশাহি থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন, তাঁদের বিষয়ে সব নথি কর্তৃপক্ষকে জমা করতে বলেছেন তদন্তকারীরা। ২০০১ সাল থেকে যত জন চিকিৎসকের নাম নথিভুক্ত হয়েছে, তাদের তালিকা দিতে বলা হয়েছে দিল্লি মেডিক্যাল কাউন্সিলকে।
দিল্লিতে লালকেল্লার কাছে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন উমর। সেই উমর শ্রীনগরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ (জিএমসি) থেকে ২০১৭ সালে ডাক্তারি পাশ করেন। শ্রীনগর এবং অনন্তনাগের কয়েক জায়গায় ডাক্তারি করেছিলেন তিনি। তার পরে আল-ফালাহ্তে যোগ দেন।
মুজাম্মিল আল-ফালাহ্তে ফিজিয়োলজি পড়াতেন। ক্যাম্পাসেই থাকতেন। অভিযোগ, তাঁর জায়গা থেকে ২,৯০০ কোজি বিস্ফোরক, আইইডি তৈরির কাঁচামাল উদ্ধার হয়েছে।
শাহিন লখনউ এবং কানপুরে ডাক্তারি করতেন। ২০২১ সালে আল-ফালাহ্তে যোগদান করেন। জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখার ভার ছিল তাঁর হাতে।
মজফ্ফর দক্ষিণ কাশ্মীরের কাজিগুন্দ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। জম্মু ও কাশ্মীর মেডিক্যাল বোর্ডের ছাড়পত্র ছাড়াই তিনি যোগ দেন আল-ফালাহ্তে।