অহমদাবাদের বিমানবন্দরের রানওয়ে ছেড়ে ওড়ার মুহূর্তে এয়ার ইন্ডিয়ার সেই বিমান। ছবি: সংগৃহীত।
অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় নেপথ্য কারণ হিসাবে নতুন তত্ত্ব নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্টে দাবি, আদৌ ওই বিমানের পাইলটেরা ভুল করেননি। বরং যান্ত্রিক ত্রুটিই ছিল দুর্ঘটনার মূল কারণ। ভেঙে পড়ার আগে ওই বিমানের দু’টি ইঞ্জিনই খারাপ হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তদন্তেও তেমন ইঙ্গিতই মিলছে। সেই কারণেই রানওয়ে ছাড়ার পরে আর বেশি দূর উঠতে পারেনি বিমানটি। তা ভাসিয়ে রাখা যায়নি শূন্যে। মুহূর্তেই বিমান ভেঙে পড়ে।
অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। চলতি সপ্তাহের শেষে বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে তারা তদন্তের প্রথম রিপোর্টটি প্রকাশ করতে পারে। এই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ। তাতে বলা হয়েছে, বিমান সংস্থার পাইলটেরা ওই বিমানের সম্ভাব্য সমস্যাগুলি ফ্লাইট সিমুলেটরে প্রয়োগ করে দেখেছেন। বলা হচ্ছে, অহমদাবাদ বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার সঠিক সময়ে বন্ধ হয়নি। বিমানের ডানাতেও কিছু সমস্যা হচ্ছিল। যে কারণে সেটি উপরের দিকে উঠতে পারেনি। এই পরিস্থিতি তৈরি করে দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র এগুলি বিমান ভেঙে পড়ার কারণ হতে পারে না। সমস্যা ছিল অন্য কোথাও। মনে করা হচ্ছে, ওই বিমানের দু’টি ইঞ্জিন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে তদন্তকারী সংস্থা এ বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি।
রিপোর্টে আরও দাবি, দুর্ঘটনাস্থলে বিমানের ধ্বংসস্তূপ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বিমানের ডানার ফ্ল্যাপ এবং স্লটগুলি, যেগুলি বিমানকে উড়তে সাহায্য করে থাকে, সেগুলি সঠিক সময়ে সঠিক ভাবেই প্রসারিত করা হয়েছিল। অভিশপ্ত বিমানের পাইলটেরা দুর্ঘটনার আগে বিপদবার্তা (মে ডে কল) পাঠিয়েছিলেন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, এই মে ডে কল এবং বিমান ভেঙে পড়ার মধ্যে মাত্র ১৫ সেকেন্ডের ব্যবধান ছিল।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মোট ২৬০ জনের। বিমানটিতে ২৪২ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন মাত্র যাত্রী বেঁচে গিয়েছেন। বিমানটি যেখানে ভেঙে পড়েছে এবং বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখানেও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর মৃতদেহ শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন অহমদাবাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই নমুনা মিলিয়ে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিরও।