গ্রাফিক আনন্দবাজার ডট কম।
এসআইআর-এ (ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন) প্রথম এক মাসের কাজে কতটা ‘জল’ রয়েছে, তা মাপতে আসরে নেমেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর শুনানি-পর্বের ফাঁকফোঁকর বোজানোর পরিকল্পনাও এখন থেকেই শুরু করল তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রতিটি শুনানি ক্যামেরা-বন্দি করার পরিকল্পনা একপ্রকার নিশ্চিত করে ফেলেছে দিল্লির নির্বাচন সদন। মাইক্রো-পর্যবেক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবও রয়েছে বিবেচনায়। শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাটি অপরিবর্তিত থাকলে প্রতিটি শুনানিই হবে ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা এবং মাইক্রো-পর্যবেক্ষকদের সামনে। পরিস্থিতি বুঝে তৈরি হবে সন্দেহভাজনদের জন্য শুনানির বিশেষ প্রশ্নমালাও। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শুনানি পর্বে মাইক্রো-পর্যবেক্ষক নিয়োগ এবং ওয়েব কাস্টিং-এর দাবিই কাল জানিয়ে এসেছিলেন কমিশনে।
২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারেরাই (ইআরও) এসআইআরের শুনানি পর্বের মূল দায়িত্বে থাকবেন। ২০০২ সালের এসআইআরে মিল না থাকা এবং সন্দেহভাজন ভোটারদের শুনানির পাশাপাশি, খতিয়ে দেখা হবে নথিপত্র। সবটা বিচার করে সেই ব্যক্তি চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় থাকবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন ইআরও-ই। স্থির হয়েছে, প্রতিটি শুনানি কমিশনের ঘরে সরাসরি সম্প্রচারের সঙ্গে হবে রেকর্ডও। যে ভোটার শুনানিতে যাবেন, তোলা থাকবে তাঁর ছবি।
শুনানির পুরো কথোপকথন, পেশ করা নথি এবং ইআরও-র মতামত সবই নথিবদ্ধ থাকবে। রাজ্য সরকারি কর্মীদের বদলে ব্যাঙ্ক, এলআইসি-র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি থেকে নিয়োগ হতে পারে মাইক্রো পর্যবেক্ষকও। তাই এক-একটি জেলার কতগুলি জায়গায় শুনানি কেন্দ্র থাকবে, তার হিসাব জেলাশাসকদের থেকে চেয়েছে কমিশন। কমিশন-কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিহারে শুনানি পর্বে যেখানে অভিযোগ বা সমস্যার সম্ভাবনা ছিল, সেখানে পদ্ধতি ভিডিয়ো করা হয়েছিল। এ রাজ্যের পদক্ষেপ এক ধাপ এগিয়ে।
এসআইআরের প্রথম পর্যায় শেষ হবে ১১ ডিসেম্বর। কিন্তু গত এক মাসে ফর্ম দেওয়া-নেওয়া, ডিজিটাইজ় এবং তথ্য নথিবদ্ধ করার কাজে বিস্তর গরমিলের অভিযোগ উঠছে। এই কাজে বিএলও এবং ইআরও-দের একাংশের ভূমিকা এবং তাঁদের উপর রাজনৈতিক প্রভাব নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এখন রাজ্যস্তরে বিশেষ পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্তের নেতৃত্বে জেলায় জেলায় নজরদারি এবং ‘জল’ বের করার কাজ করছেন আরও ১২ জন রোল-পর্যবেক্ষকক। যোগাযোগ রাখছেন জেলাশাসক এবং অন্য জেলা-আধিকারিকদের সঙ্গে। ঘটনাচক্রে, ঠিক এই সময়েই বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে ২৩টি জেলায় ২৩ জন সিনিয়র আধিকারিককে নিয়োগ করেছে নবান্ন। তাঁরাও যোগাযোগ রাখবেন জেলা প্রশাসন এবং জেলাশাসকদের সঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে ক্যামেরা-পর্যবেক্ষকের সিদ্ধান্ত অর্থবহ।
ন’দফা বিধিতে এসআইআরের কাজ এখন পুনর্যাচাই করছেন রোল-পর্যবেক্ষকেরা। তার পরেও তালিকায় কিছু সন্দেহভাজন থেকে গেলে, তাঁদেরও শুনানিতে ডাকা হবে। তাঁদের জন্য থাকবে পৃথক প্রশ্নমালা।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে