বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয়কুমার সিনহা। ছবি: পিটিআই।
ভোটার তালিকা বিতর্কে এ বার নির্বাচন কমিশন নোটিস পাঠাল বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয়কুমার সিনহাকে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব অভিযোগ তুলেছেন, উপমুখ্যমন্ত্রীর নামে দু’টি ভোটার কার্ড (এপিক নম্বর) রয়েছে। ওই ঘটনায় এ বার উপমুখ্যমন্ত্রীর জবাব চাইল কমিশন। আগামী ১৪ অগস্ট (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৫টার মধ্যে উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয়কুমারকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে কমিশন লিখেছে, এ বছরের বিশেষ এবং নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) সময়ে খসড়া ভোটার তালিকায় দু’জায়গায় দুই পৃথক এপিক নম্বরে তাঁর নাম রয়েছে। একটি বাঁকীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। অন্যটি লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রে। কমিশন আরও জানিয়েছে, বিশেষ এবং নিবিড় সংশোধনের আগে থেকেই ভোটার তালিকায় দু’জায়গায় উপমুখ্যমন্ত্রীর নাম পাওয়া গিয়েছে। এ বিষয়ে বিজয়কুমারের বক্তব্য জানতে চেয়েছে কমিশন।
রবিবার সকালেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে উপমুখ্যমন্ত্রীর নামে দু’টি ভোটার কার্ড থাকার অভিযোগ তুলেছেন তেজস্বী। একই সঙ্গে কাঠগড়ায় তুলেছেন কমিশনকেও। বিহারে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আরজেডি নেতা। তেজস্বীর দাবি, হয় দু’টি এপিক নম্বরের জন্য নথিতেই বিজয়কুমার স্বাক্ষর করেছেন, কিংবা এসআইআর-এর গোটা প্রক্রিয়াতেই জালিয়াতি রয়েছে।
বস্তুত, গত ১ অগস্ট বিহারের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন। তা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। এই নিয়ে বিতর্কও দানা বেঁধেছে। যদিও খসড়া তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর জন্য এক মাস সময় দিয়েছে কমিশন। তালিকা থেকে কারও নাম বাদ দেওয়া বা সংযোজনের জন্য এই এক মাস সময় রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে খোদ বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে এমন অভিযোগে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তেজস্বীর দাবি, দু’টি পৃথক এপিক নম্বরে উপমুখ্যমন্ত্রীর বয়সও ভিন্ন ভিন্ন দেওয়া রয়েছে। যদিও সে বিষয়ে কমিশনের চিঠিতে কোনও উল্লেখ নেই।
খসড়া ভোটার তালিকায় দু’জায়গায় নাম থাকা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই মুখ খুলেছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর দাবি, অতীতে তাঁর পরিবার বাঁকিপুর বিধানসভা এলাকায় থাকত। বর্তমানে তিনি লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার হিসাবে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করিয়েছেন। তেজস্বীর অভিযোগের পরে বিজয়কুমার জানান, দু’জায়গায় নাম থাকার বিষয়টি নজরে আসার পরেই বাঁকিপুর থেকে নাম কাটানোর জন্য আবেদন করেছেন তিনি।
উপমুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন আরজেডি নেতা। বিজয়কুমারের বক্তব্য, গত বছরের এপ্রিলেই বাঁকিপুরের বদলে লখিসরাইয়ের ঠিকানায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেটি হয়নি। তার পরে বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-র সঙ্গে যোগাযোগ করে আবেদনপত্র জমা দেন। তাঁর দাবি, করণিক স্তরে খামতির জন্যই এটি হয়েছে। তবে তিনি শুধুমাত্র লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রেই ভোট দেন বলে দাবি বিজয়কুমারের।