মাটির নীচে অগ্নি-গহ্বর, বন্ধ হচ্ছে ধানবাদ-চন্দ্রপুরা লাইন

আগামী ১৫ জুন থেকে এই ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনের উপর দিয়ে আর কোনও ট্রেন চালানো যাবে না বলে পূর্ব-মধ্য রেলকে জানিয়ে দিয়েছে মন্ত্রক। রেল সূত্রের খবর, ওই লাইন দিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মেল ট্রেন ও এক্সপ্রেস ট্রেন যাতাযাত করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাঁচী ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৭ ১২:০০
Share:

নেই-চাকা: বন্ধ হচ্ছে ধানবাদ-চন্দ্রপুরার এই লাইন। ছবি: চন্দন পাল।

মাটির নীচে কয়লা খনির মধ্যে জ্বলতে থাকা আগুনের জেরেই ধানবাদ-চন্দ্রপুরা রেল লাইন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রেল মন্ত্রক।

Advertisement

আগামী ১৫ জুন থেকে এই ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনের উপর দিয়ে আর কোনও ট্রেন চালানো যাবে না বলে পূর্ব-মধ্য রেলকে জানিয়ে দিয়েছে মন্ত্রক। রেল সূত্রের খবর, ওই লাইন দিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মেল ট্রেন ও এক্সপ্রেস ট্রেন যাতাযাত করে। হাওড়া-রাঁচী শতাব্দী এক্সপ্রেস, হাওড়া-রাঁচী ইন্টারসিটি ভায়া ধানবাদ, হাটিয়া-পাটলিপুত্র এক্সপ্রেস, গোরখপুর মৌর্য এক্সপ্রেসের মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন এখন ওই লাইন দিয়ে যাতায়াত করে।

ধানবাদ ডিভিশনের ডিআরএম মনোজকৃষ্ণ আখোরি বলেন, ‘‘আপাতত ওই ট্রেনগুলির কয়েকটি গোমো দিয়ে, বাকিগুলি আদ্রা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।’’

Advertisement

রেল বোর্ড সূত্রের খবর, পূর্ব-মধ্য রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে লেখা ওই নির্দেশে রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, ঝরিয়া কয়লা খনির ভিতরের অংশে দীর্ঘদিন ধরে জ্বলতে থাকা আগুনের জেরে উপরে রেল লাইনের তলার মাটি পুড়ে ঝুরঝুরে হয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ওই রেলপথ ও মাটি পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, মাটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় যে কোনও সময়ে রেল লাইনের তলায় ধস নামতে পারে। তাতে যাত্রীবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রেল মন্ত্রক কোনও রকম বাড়তি ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। কয়েক বছর আগেই রেললাইনের ওই অংশে এই পাতাল-অগ্নির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিল ভারত কোকিং কোল লিমিটেড বা বিসিসিএল। খনির আগুনে পুড়ে যাওয়া আলগা মাটির উপর দিয়ে দ্রুত গতির ট্রেন চলাচল করতে গিয়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এই বিষয়টি নিয়েই সম্প্রতি চরম সতর্কতা জারি করেন ডিরেক্টর জেনারেল অব মাইন সেফটি (ডিজিএমএস)।

রেল সূত্রের খবর, ২০১১ সাল থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। দু’বার বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাঁরাও ওই এলাকা থেকে রেললাইন সরিয়ে নেওয়ার কথাই বলেছিলেন। সংসদীয় কমিটির রিপোর্টেও লাইন সরানোর কথাই বলা হয়েছে। কিন্তু বিপুল খরচের (সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি) জন্যই লাইন সরিয়ে নেওয়ার কথা এতদিন ভাবাই হয়নি।

সম্প্রতি ওই সতর্ক বার্তার প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লিতে খনিসম্পদ মন্ত্রক ও রেল মন্ত্রকের কর্তারা ঝাড়খণ্ড পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে গৃহীত সিদ্ধান্তের জেরেই রেলমন্ত্রক আজ লাইন বন্ধের নির্দেশ জারি করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন