রাজ্যের বিজেপি-অগপ-বিপিএফ জোট সরকারের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের পরের দিন এক বছরের কাজের সমালোচনা করে পুস্তিকা প্রকাশ করল কংগ্রেস। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ দাবি করলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোট সরকারের লড়াই লোকদেখানো। মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তই হচ্ছে না। রাজ্যে শুরু হয়েছে গুপ্তহত্যা।
বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া বলেন, “নরেন্দ্র মোদী এক দিনে রাজ্যকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দেওয়ার যে কথা নিয়ে গর্ব করেন, তার সিংহভাগ প্রকল্পই কংগ্রেস সরকারের পরিকল্পনা ছিল। কংগ্রেস তৈলক্ষেত্র নিলাম করেছে-এই অভিযোগও অসত্য।” গত কালের অনুষ্ঠানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা কাজিরাঙা-পবিতরা-সিপাঝার থেকে বাংলাদেশিদের বিতাড়ন করা হয়েছে বলে জানান। দেবব্রতবাবুর প্রশ্ন, “বিতাড়িত বাংলাদেশিরা এখন কোথায়? তাঁদের আটক (ডিটেনশন) শিবিরে রাখা হয়নি কেন?” কংগ্রেসের অভিযোগ, বিপুল অর্থ খরচ করে এই বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান করা অর্থহীন। ওই অনুষ্ঠানের টাকা জোগাড়ের জন্য সিমেন্টের দাম বাড়ানো হয়েছে। কংগ্রেস হিসেব দেয়, গত এক বছরে মাত্র ৬০ মিটার সীমান্ত সিল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি হয়েছে মাত্র ১৫টি।
মোদী ভাষণে বলেছিলেন, ধলা-শদিয়া সেতুর ‘ফিজিবিলিটি রিপোর্ট’ অটলবিহারী বাজপায়ীর আমলে তৈরি। গগৈ দাবি করেন, তা মিথ্যে। রিপোর্ট তৈরি হয় কংগ্রেস আমলে, ২০০৯ সালে। সেতুর সিংহভাগই কংগ্রেসের করা। শইকিয়া জানান, কংগ্রেস আমলে সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত সামগ্রী প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়েছিল। তাই সেতু সময়মতো নির্মাণ শেষ করা যায়নি। তরুণ গগৈ বলেন, "আমার সঙ্গে জঙ্গির মতো ব্যবহার করে ধলা সেতুতে ঢুকতে দেওয়া হয় না। অথচ বিজেপির বিধায়করা সেতু ঘুরে যথেচ্ছ ছবি তুলেছেন। এ ঘটনাই মুখ্যমন্ত্রীর বৈষম্যনীতির প্রমাণ। প্রতিবাদে আমি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাইনি।" গগৈয়ের হিসেবে, এক বছরে বিজেপির জনপ্রিয়তা ৫ শতাংশ কমেছে। তাঁর প্রশ্ন, দুর্নীতি দমনের দাবি করা সরকার মন্ত্রী রঞ্জিৎ দত্ত, কার্বি স্বশাসিত পরিষদের সিইএম তুলিরাম রংহাংয়ের বিরুদ্ধে কেন তদন্ত চালাচ্ছে না? সিআরপিএফ আইজির প্রতিবেদনের উল্লেখ করে গগৈয়ের অভিযোগ, রাজ্যে ফের গুপ্তহত্যা শুরু হয়েছে।