রেজাউলকে মাঝখানে রেখে কংগ্রেসের দুই প্রভাবশালী নেতা, গৌতম রায় ও কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। এই ছবিকে কেন্দ্র করেই সরব সিদ্দেকের ঘনিষ্ঠ মহল।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়কের আদালতে হাজিরাকে ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত পুলিশ প্রশাসন। দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ কর্তারা। আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে হাজিরা দেবেন অসমের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা দক্ষিণ করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক সিদ্দেক আহমদ।
বিধায়কের আদালতে হাজিরা দেওয়া নিয়ে জল অনেক গড়িয়েছে। সিদ্দেকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে আরম্ভ করে ‘রোভিং ওয়ারেন্ট’ও জারি করেছিল করিমগঞ্জের নিম্ন আদালত। করিমগঞ্জ পুলিশের ডিএসিপ গৌরব আগরওয়াল, পাথারকান্দি থানার ওসি আর পি সিংহ বিধায়ককে গ্রেফতার করতে গুয়াহাটির সরকারি আবাসেও হানা দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁকে খুঁজে পায়নি। গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবিতে দক্ষিণ করিমগঞ্জের বিধায়ক গৌহাটি হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাঁকে আজ, ২৩ এপ্রিল করিমগঞ্জের এডিজেএমের আদালতে হাজির থাকতে বলেছে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী অবশেষে আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন বিধায়ক। কিন্তু এরপর যদি এডিজেএম সিদ্দেক আহমদকে জামিন না দেন, তাহলে বিধায়কের সমর্থকরা গোলমাল করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে করিমগঞ্জের পুলিশ-প্রশাসন। করিমগঞ্জ পুলিশের এএসপি নবীন সিংহ জানিয়েছেন, ‘‘আগামী কাল আদালত চত্বরে যাতে অহেতুক লোক সমাগম না হয়, তার উপর বিশেষ নজর রাখবে পুলিশ। তাতে আদালতের যেমন অসুবিধে হতে পারে, ঠিক তেমনই আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যাও তৈরি হতে পারে। ঠিক হয়েছে, কাল আদালতে যাদের মামলা চলছে, তারাই প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়াও দক্ষিণ করিমগঞ্জ ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় আধা- সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলেও এএসপি জানিয়েছেন. সব কিছু পর্যালোচনা করে আগামী কালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দৃঢ় রাখা যে পুলিশের কাছে বড় বিষয় তা পুলিশ-প্রশাসনের গতিবিধি থেকেই পরিষ্কার।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে জনৈক রেজাউল করিমকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে সিদ্দেক আহমদের বিরুদ্ধে। বিধায়ক সে সময় সংসদীয় সচিব পদে ছিলেন। নিলামবাজার পুলিশ সেই অভিযোগ থেকে বিধায়কের নাম কেটে দিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। কিন্তু রেজাউল করিম পুলিশের চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন। করিমগঞ্জের এডিজেএম এই মামলায় সিদ্দেক আহমদকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন। বিধায়ক আদালতের সমন গ্রহণ না করলেও আদালত তাঁর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এ দিকে, রাজ্য-রাজনীতিতে সিদ্দেকের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত অসমের মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা গৌতম রায় এবং উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের সঙ্গে রেজাউল করিমের একটি
ঘনিষ্ঠ ছবি ঘিরে করিমগঞ্জে প্রবল জল্পনা শুরু হয়েছে। সিদ্দেক-ঘনিষ্টদের মতে, রেজাউলের পিছনে থেকে সিদ্দেকের বিরুদ্ধে কংগ্রেসেরই একটি মহল সক্রিয়।