প্রণাম: লালকৃষ্ণ আডবাণীর বাড়িতে নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
সেনাপতি অমিত শাহকে সঙ্গে নিয়ে নরেন্দ্র মোদী আজ সকালে হঠাৎ চলে গেলেন দিল্লির পৃথ্বীরাজ রোডে— লালকৃষ্ণ আডবাণীর বাড়ি। দরজার সামনেই অপেক্ষা করছিলেন বিজেপির প্রবীণ নেতা। তাঁকে দেখেই সটান প্রণাম করলেন মোদী।
সেখানে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে অমিতকে নিয়ে ছুটলেন আর এক প্রবীণ নেতা মুরলীমনোহর জোশীর বাড়ি। সেখানেও মাথা ঝুঁকিয়ে প্রণাম। মোদীকে ধরে বুকে জড়িয়ে নিলেন জোশী। বিপুল জয়ের জন্য মোদীকে মিষ্টিও খাইয়ে দিলেন নিজের হাতে।
ক’দিন আগে পর্যন্তও প্রচারে রাহুল গাঁধীরা অভিযোগ করতেন, পাঁচ বছর আগে ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদী দলের প্রবীণ নেতাদের মার্গদর্শক মণ্ডলীতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
অথচ পাঁচ বছরে একবার এই নেতাদের থেকে কোনও ‘মার্গদর্শন’ নেননি। এমনকি, কোনও মঞ্চে আডবাণীর সঙ্গে দেখা হলেও ফিরে তাকাতেন না নরেন্দ্র মোদী, আডবাণী হাতজোড় করে নমস্কার করলেও তাতে সাড়া দিতেন না।
প্রবীণ নেতা মুরলীমনোহর জোশীর সঙ্গে মোদী। ছবি: পিটিআই।
গত কাল বিপুল বিজয়ের পর থেকেই এ যাবৎ তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় নালিশ ঘোচানোর কাজে নেমেছেন মোদী। গত রাতে যখন বিজেপি দফতরে ‘বিজয়-উৎসব’ পালন করতে গিয়েছিলেন, তখন থেকে মোদীর এই চেষ্টা নজর এড়ায়নি দিল্লির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তাঁদের মতে, গত কাল মোদী নিজেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে তুলে ধরেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগই না কি ওঠেনি, এমনও দাবি করেন। ভোট-লড়াইয়ের পর নতুন সরকারে যে যুক্তরাষ্ট্রীয় ধর্ম পালন করবেন, সেই বার্তাও দেন।
তার পরেই আজ আডবাণী-জোশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ। প্রসঙ্গত, জোশী তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি বলে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। আর আডবাণীকে সরিয়ে গুজরাতের গাঁধীনগরে প্রার্থী হয়ে রেকর্ড ভোটে জিতেছেন অমিত। দু’জনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মোদী ও শাহ দুই প্রবীণ নেতার সঙ্গে ছবি টুইট করেন। মোদী লেখেন, ‘‘বিজেপির আজকের সাফল্য আডবাণীজিদের মতো মহান নেতাদের জন্যই সম্ভব হয়েছে। কয়েক দশক ধরে দলকে তিলে তিলে আদর্শে বড় করার ফল।’’ আর ‘প্রাজ্ঞ’জোশী সম্পর্কে প্রশস্তি করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপির অনেক কর্মীকে তিনি তৈরি করেছেন, আমাকেও।’’ একই টুইট অমিতেরও। জোশীও পরে বলেন, ‘‘দলের প্রথা অনুসারে প্রবীণদের আশীর্বাদ নিয়েছেন ওঁরা। দু’জনেই ম্যাজিক দেখিয়েছেন।’’