সিটিস্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে বা ডায়ালিসিস মেশিনের মতো চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আটটি যন্ত্রকে ওষুধ নীতির আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। গত কাল রাতে সরকারের ওই নির্দেশিকার ফলে বিদেশ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যন্ত্র কেনা বা বিক্রি করা কিংবা এ দেশে তৈরি করার বিষয়টি এ বার থেকে খতিয়ে দেখবে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)। নতুন নিয়ম কার্যকর হবে ১ এপ্রিল, ২০২০ সাল থেকে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা হল, মূলত যন্ত্রগুলির গুণমান সুনিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। কারণ এ যাবৎ ওই যন্ত্রগুলি বিদেশ থেকে কেনা বা এ দেশের বানানোর বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে কোনও স্পষ্ট নীতি ছিল না। কেন্দ্রের বক্তব্য, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় এমন প্রায় পাঁচ হাজার যন্ত্রের মধ্যে ওষুধ নীতির আওতায়, অর্থাৎ সরকারি নজরদারির আওতায় রয়েছে মাত্র ২৩টি যন্ত্র। অথচ বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে যে, বিদেশ থেকে আনা বহু যন্ত্রই নির্দিষ্ট গুণমানের নীচে ও সেকেলে। যন্ত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও সেগুলি ব্যবহার করছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান।
কাল বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য মন্ত্রক, ড্রাগ কন্ট্রোল, বায়োটেকনোলজি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্তারা। আলোচনায় ঠিক হয় রক্তচাপ মাপার মতো সাধারণ যন্ত্র থেকে শুরু করে এমআরআইয়ের মতো আধুনিক মেশিনের গুণমান ও কার্যকারিতা খতিয়ে দেখার জন্য আইনের প্রয়োজন রয়েছে। বৈঠকের শেষে সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে আটটি যন্ত্রকে ওষুধ নীতির আওতায় আনা হয়।
গত কালের আলোচনায় এও দেখা যায়, দেশে যে অত্যাধুনিক যন্ত্রগুলি আসছে সেগুলির সম্পর্কে সরকারের কাছে তথ্য নেই। আমদানি হওয়ার পরে সেগুলি কোথায় যাচ্ছে, কোন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে সে বিষয়ে সরকারের কাছে তথ্য থাকছে না। চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রগুলির বিষয়ে তথ্য জানতে একটি জাতীয় ওয়েব পোর্টাল চালু করার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্র। যেখানে বিদেশ থেকে আমদানি করা যন্ত্র তো বটেই, দেশে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আধুনিক মেশিনের বিষয়েও তথ্য পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। জানাতে হবে, কবে সেই যন্ত্রের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক মনে করছে, এর ফলে রুগির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে। কোনও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান আর মেয়াদ-উত্তীর্ণ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবে না।