—প্রতীকী চিত্র।
পাশ হওয়া বিলে পদক্ষেপের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করতে পারে না কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের বিল পাশ করানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে এমনই জানাল কেন্দ্র।
সাংবিধানিক বেঞ্চের শুনানিতে কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসাবে হাজির ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। রাজ্যের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সলিসিটর জেনারেল আদালতকে বলেন, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জানতে চেয়েছেন, কোনও রাজ্য সরকার কি ৩২ অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের কি করতে পারে? একই সঙ্গে সংবিধানের ৩৬১ অনুচ্ছেদের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন সলিসিটর জেনারেল।
তাঁর যুক্তি, ৩৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির কার্যপদ্ধতি নিয়ে কেন্দ্র বা কোনও রাজ্য সরকার আদালতে মামলা করতে পারে না। সলিসিটর জেনারেলের দাবি, এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালেরা বিশেষ রক্ষাকবচ পান। ফলে কোনও সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না। শুধু তা-ই নয়, ৩৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল বিল নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন, কোনও আদালতের সামনে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন তাঁরা। সলিসিটর জেনারেলের আরও যুক্তি, কোনও ব্যক্তির আদালতে মামলা করার অধিকার সুনিশ্চিত করে অনুচ্ছেদ ৩২। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্য সরকারের কোনও মৌলিক অধিকার হয় না।
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল সে রাজ্যের বিধানসভায় পাশ হওয়া ১০টি বিল আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ রাজ্যপালের আচরণকে ‘বেআইনি’ বলে উল্লেখ করে। পাশাপাশি বিল ছাড়ার বিষয়ে সময় বেঁধে দেয়। গত এপ্রিল মাসের সেই নির্দেশে রাজ্যপালকে এক মাস এবং রাষ্ট্রপতিকেও তিন মাসের মধ্যে পদক্ষেপ করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলে কেন্দ্র। তাদের প্রশ্ন, শীর্ষ আদালত কি এ ভাবে রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দিতে পারে? রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও গত ১৩ মে ওই বিষয়ে ১৪টি সাংবিধানিক প্রশ্ন তুলে মতামত জানতে চান।
তার পরেই বিষয়টির মীমাংসা করতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি এএস চান্দুরকরকে নিয়ে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয় শীর্ষ আদালতে।