দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জল ছেটানো হচ্ছে দিল্লির রাস্তায়। ছবি: পিটিআই।
দীপাবলির আগেই দিল্লিতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ শুরু হয়ে গেল। দূষণ মোকাবিলায় রবিবার রাত থেকে দ্বিতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি কার্যকর করে দিল দিল্লি সরকার। রবিবার দিল্লির বেশ কিছু জায়গায় বাতাসের গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) ৩০০ পার করে গিয়েছে। বাতাসের গুণমান ৩০০ পেরিয়ে গেলে সেটিকে ‘খুব খারাপ’ বলে বিবেচনা করা হয়। এই পরিস্থিতি রবিবার সন্ধ্যায় এক বৈঠকের পরে সেখানে দ্বিতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বছর দীপাবলিতে দিল্লিতে শর্তসাপেক্ষে সবুজ আতশবাজি তৈরি এবং বিক্রিতে ছাড়পত্র দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, ১৮ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে বাজি পোড়ানো যাবে। অর্থাৎ, শনিবার থেকেই দিল্লিতে বাজি পোড়ানোর অনুমতি রয়েছে। এ অবস্থায় রবিবার সকাল থেকেই দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে বাতাসের গুণমান ৩০০ পেরিয়ে যায়। যদিও বাজি পোড়ানোর জন্যই তা হয়েছে কি না, সেটি স্পষ্ট নয়। তবে বাতাসের গুণমান ‘খুব খারাপ’ হতেই পদক্ষেপ করল প্রশাসন।
রাজধানী দিল্লিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য চার স্তরীয় পরিকল্পনা রয়েছে ‘কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’ (সিএকিউএম)-এর। একেই বলে ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ (জিআরএপি)। দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ‘খারাপ’ হলে জিআরএপি-১ চালু করা হয়। এই সময় রাস্তায় মাঝেমধ্যে জল ছেটানো হয়। খোলা জায়গায় বর্জ্য পোড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে দিল্লিতে জিআরএপি-১ চালু রয়েছে।
এ বার বাতাসের গুণমান ‘খুব খারাপ’ হতেই জিআরএপি-২ চালু করা হল দিল্লিতে। জিআরএপি-২ কার্যকর থাকাকালীন, রোজ রাস্তায় জল ছেটানো হয়। জেনারেটরের ব্যবহার কমাতে বিদ্যুতের জোগান বৃদ্ধি করা হয়। নাগরিকদের নিজের গাড়ির ব্যবহার কমাতে পার্কিংয়ের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। এই সময়ে দিল্লির রাস্তায় মেট্রো, ব্যাটারিচালিত বাসের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। এর পরে বাতাসের গুণমান আরও খারাপ হলে তৃতীয় এবং চতুর্থ স্তরেরও নিয়ন্ত্রণবিধি রয়েছে দিল্লিতে।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (সিপিসিবি)-এর তথ্য অনুসারে, রবিবার বিকেল ৪টের সময় রাজধানী দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ছিল ২৯৬। সন্ধ্যা ৭টায় তা আবার ৩০২ হয়ে যায়। রাজধানী দিল্লিতে বাতাসের গুণমান পরীক্ষা করার যে ৩৮টি কেন্দ্র রয়েছে, তার মধ্যে ১২টিতেই বাতাসের গুণমান ‘খুব খারাপ’ ধরা পড়েছে। আনন্দ বিহারে রবিবার বাতাসের গুণমান ৪৩০ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। এ ছাড়ডা ওয়াজ়িরপুর, বিবেক বিহার, দ্বারকা, আরকে পুরম, সিরি ফোর্ট, দিলশাদ গার্ডেন, জাহাঙ্গিরপুরী, পঞ্জাবিবাগ, নেহরু নগর, অশোক বিহার এবং বাওয়ানাতেও বাতাসের গুণমান ছিল ৩০০-র উপরে।