ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লির গদিতে বসে ‘ক্ষমতার যথেচ্ছ অপব্যবহার’ করেছে অরবিন্দ কেজরীবাল সরকার। প্রাক্তন উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ গঠিত তিন সদস্যের শুংলু কমিটির এক রিপোর্ট এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। মন্ত্রী সত্যন্দ্র জৈনের মেয়েকে দিল্লি স্টেট হেল্থ মিশন-এর মিশন ডিরেক্টর পদে বসানো, আম আদমি পার্টির কার্যালয়ের জন্য জমি দেওয়া বা বিভিন্ন পদে আপের সদস্যদের পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করা-সহ কেজরীবাল সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে কমিটি। রিপোর্ট নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি আপ সরকার।
দিল্লির প্রশাসক কে, এই প্রশ্নে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কেজরীবাল সরকার। সেই মামলার রায় জানাতে গিয়ে গত ৪ অগস্ট দিল্লি হাইকোর্ট উপ-রাজ্যপালকেই প্রশাসক হিসাবে মনোনিত করে। এর পরেই কেজরী সরকারের নানা সিদ্ধান্তের তদন্তে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন তত্কালীন উপ রাজ্যপাল নজীব। গত বছরেই উপ-রাজ্যপালকে এই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয় শুংলু কমিটি। তবে এই রিপোর্ট কোনও দিনই প্রকাশ্যে আনেননি নজীব। গত বুধবার প্রথম এই রিপোর্টের কথা প্রকাশ্যে আসে। তথ্যের অধিকার আইনে তার এক কপি সম্প্রতি হাতে পেয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতৃত্ব রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আনার দাবি জানালেও তা অস্বীকার করেছেন নজীব জঙ্গ। যদিও ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
রাজনীতিতে দলাইকে কাজে লাগাচ্ছে দিল্লি: চিন
শুংলু কমিটির মতে, সবক’টি অনিয়মের মূলে রয়েছে ২০১৫-য় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের গৃহীত একটি সিদ্ধান্ত। কেজরী সরকার দাবি করে, সংবিধানের ২৩৯(৩)এ ধারার ভিত্তিতে বিধানসঙায় পাশ হওয়া বিষয়গুলিতে উপ-রাজ্যপালের সঙ্গে কোনও আলোচনার প্রয়োজন নেই। সেই মতো সরকারি আমলাদের নজীবের নির্দেশ না মানর নির্দেশ দেয় সরকার। এমনকী নজীবের কমিটির যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে আপ সরকার। কমিটির দাবি, তার পর থেকেই উপ-রাজ্যপালের কোনও পরামর্শ নেননি সরকারি আধিকারিকেরা। যা পরে রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত হয়।
একশো পাতারও বেশি জুড়ে ওই রিপোর্টে আপ সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে কমিটি। কমিটি সুপারিশ করেছে, আপ-এর দলীয় কার্যালয়ের জন্য দেওয়া জমি বাতিল বলে গণ্য করা উচিত। পাশাপাশি, দিল্লির মহিলা কমিশনের তৎকালীন চেয়ারপার্সন হিসাবে স্বাতী মালিওয়ালের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিটি। এ ছাড়া, সরকারি আধিকারিকদের দফতরে বদলি, উপ-রাজ্যপালের অনুমোদন ছাড়াই আপের মন্ত্রীদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিটি।
রিপোর্ট নিয়ে আপ সরকার কোনও মন্তব্য না করলেও নজীব জঙ্গ এর আগে জানিয়েছিলেন, শুংলু কমিটির রিপোর্টে সরকারের অনিয়মের প্রমাণ মিললে অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলাও রুজু করা হতে পারে।