প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করেও হার্দিক পটেলকে অনশনস্থল থেকে সরানোর কথা ভাবছে সরকার। ছবি: পিটিআই।
অনশনকারী হার্দিক পটেলের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে গুজরাত জুড়ে হিংসা ছড়াতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই হার্দিককে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা ভাবনা-চিন্তা করছে রাজ্য সরকার।
শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে পতিদারদের জন্য সংরক্ষণ এবং কৃষিঋণ মকুব— এই জোড়া দাবিতে ২৫ অগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন হার্দিক। টানা পাঁচ দিন অনশনের প্রভাবে হার্দিকের স্বাস্থ্যহানি হলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ছড়াতে পারে। সে কারণে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করেও পতিদার আন্দোলনের মুখ হার্দিককে অনশনস্থল থেকে সরানোর কথা ভাবছে সরকার। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “হার্দিকের স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হলে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে হিংসা ছড়ানোর মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। সেই পরিস্থিতি রোখার পাশাপাশি হার্দিক যাতে প্রয়োজনীয় চিকিত্সার সুবিধা পান, সে কারণে বলপ্রয়োগ করে তাঁকে সরানোর কথা ভাবছে সরকার।”
হিংসা রুখতে ইতিমধ্যেই আগাম ব্যবস্থা নিয়েছে গুজরাত প্রশাসন। অমদাবাদের গ্রিনউ়ড গার্ডেন সিটি, যেখানে হার্দিক অনশন করছেন, সেখানে ফৌজদারী দণ্ডবিধি (সিআরপিসি)-র আওতায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ফলে ওই এলাকায় চার বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে জড়ো হতে পারবেন না। হার্দিককে দেখতে আসা মানুষজনের উপরেও চলছে কড়া তল্লাশি।
আরও পড়ুন
ডিএ বাড়ল কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের
জোড়া দাবি নিয়ে একটানা অনশনে হার্দিক পটেল। ছবি: পিটিআই।
বুধবার দুপুরেও হার্দিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিত্সকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, হার্দিকের দেহে কিটোন এবং অ্যাসিটোনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যাতে কিডনির স্বাভাবিক কাজকর্মে প্রভাব পড়তে পারে। চিকিত্সকেরাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এর আগে, সপ্তাহের গো়ড়াতেও হার্দিকের শারীরিক পরীক্ষার পর তাঁকে ফলের রস খেতে বলেছিলেন চিকিত্সকেরা। তবে তা তিনি অস্বীকার করেন।
আরও পড়ুন
পুলিশি হেফাজত নয়, বিদ্বজ্জনদের গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
সরকারের এই অতি ‘উদ্যোগী’ মনোভাব নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি হার্দিক। তাঁর টুইট, “ভারতীয় সংবিধানে কি এমন কোনও নতুন নিয়ম করা হয়েছে, যাতে বিজেপি এবং পুলিশ মিলে স্থির করবে আপনার বাড়িতে কারা আসবেন আর কাদের আসতে দেওয়া হবে না। গত পাঁচ দিন ধরে তা-ই মনে হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন, কিন্তু মাত্র ১১২৫ জনকেই আমার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন
নোটবন্দির বাতিল টাকার প্রায় পুরোটাই ফিরেছে ঘরে: আরবিআই
এ নিয়ে আদালতকেও চিঠি দিয়েছে পতিদার সম্প্রদায়ের মানুষেরা। গুজরাত হাইকোর্টের কাছে তাঁরা দাবি করেছেন, হার্দিক পটেলের সমর্থকদের বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক করা হচ্ছে। এমনকি, অমদাবাদের অনশনস্থলে ভলান্টিয়ারদের শাক-সব্দি, দুধ-ফলের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী নিয়েও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)