(বাঁ দিক থেকে) রবীন্দ্র জাডেজা, নরেন্দ্র মোদী এবং রিভাবা জাডেজা। —ফাইল চিত্র।
গুজরাতে মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজাল বিজেপি। বৃহস্পতিবার সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল ছাড়া মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যেরা পদত্যাগ করেছিলেন। তখনই জানা গিয়েছিল যে, মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যেরা শুক্রবার শপথ নেবেন। সেই মতো শুক্রবার দুপুরে গান্ধীনগরের রাজভবনে মোট ২৫ জন বিধায়ক মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন ক্রিকেটার রবীন্দ্র জাডেজার স্ত্রী তথা গুজরাতের জামনগর উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক রিভাবা জাডেজাও। নতুন মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন মোট ১৯ জন। আগের মন্ত্রিসভায় থাকা ছ’জনকে রাখা হয়েছে নতুন মন্ত্রিসভায়। গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাঙ্ঘভি উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর গুজরাতে কেউ উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না।
শুক্রবার সকালে গুজরাতের রাজ্যপাল আচার্য দেবরাটের সঙ্গে দেখা করেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র। রাজ্যপালের হাতে পদত্যাগী মন্ত্রী এবং হবু মন্ত্রীদের নামের তালিকা তুলে দেওয়া হয়। বিজেপির একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ২০২৭ সালের বিধানসভা ভোটের আগে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কৌশল মেনেই মন্ত্রিসভার খোলনলচে বদলানো হল। চলতি মাসের গোড়ায় গুজরাতের বিজেপি সভাপতি পদে আনা হয়েছিল সে রাজ্যের মন্ত্রী জগদীশ বিশ্বকর্মাকে। বিজেপির ‘এক পদ, এক ব্যক্তি’ নীতি অনুসারেই জগদীশ নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
গুজরাতে বিজেপির সাংগঠনিক এবং প্রশাসনিক রদবদল অবশ্য নতুন নয়। ২০১৪-র মে মাসে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁর উত্তরসূরি মনোনীত হয়েছিলেন আনন্দীবেন পটেল। কিন্তু ২০১৬-র অগস্টে ‘শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশে’ ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিজয় রূপাণী। তাঁর নেতৃত্বেই ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে তুল্যমূল্য লড়াইয়ে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ‘দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে’ ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। জৈন সম্প্রদায়ের নেতা রূপাণীর বদলে প্রভাবশালী পটেল জনগোষ্ঠীর ভূপেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রিসভার খোলনলচে বদলে ফেলে ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটে বিপুল জয় পেয়েছিল বিজেপি। ২০২৭ সালের শেষপর্বে গুজরাতে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। এ বার আগেভাগেই বিজেপি ‘ঘর গোছানোর’ কাজ শুরু করল বলে মনে করা হচ্ছে।
নতুন মন্ত্রিসভাতেও জাতপাতের অঙ্ক মাথায় রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভার আট জন সদস্য অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র অন্তর্ভুক্ত। ছ’জন গুজরাতের প্রভাবশালী পটীদার গোষ্ঠীর মানুষ। চার জন আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত, তিন জন তফসিলি জনজাতির মানুষ। মন্ত্রীদের মধ্যে দু’জন ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ভুক্ত, এক জন ব্রাহ্মণ, আর এক জন জৈন।
১৮২ বিধানসভা আসনবিশিষ্ট গুজরাতে সর্বোচ্চ ২৭ জনকে মন্ত্রী করা যায়। আগের মন্ত্রিসভায় মোট ১৭ জন সদস্য ছিলেন (মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও আট জন পূর্ণমন্ত্রী এবং আট জন প্রতিমন্ত্রী)। সে দিক থেকে দেখলে কেবল মন্ত্রিসভার রদবদলই নয়, সম্প্রসারণও হল।