হরিদ্বারের মনসাদেবী মন্দিরে জড়ো হয়েছেন পুলিশ এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। ছবি: পিটিআই।
এখনও চোখ বন্ধ করলেই আঁতকে উঠছেন তরুণী। তাঁর সামনে ভেসে উঠছে সেই হুডোহুড়ির ঘটনা। তিনি জানালেন, তাঁর মাথা মাড়িয়ে চলে যান পুণ্যার্থীরা। শিশুদেরও রেয়াত করেননি। কোনওমতে প্রাণরক্ষা হয়েছে তাঁর এবং পরিবারের। হরিদ্বারের মনসাদেবী মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে রবিবার প্রাণ হারিয়েছেন সাত জন। আহত বেশ কয়েক জন।
সংবাদমাধ্যমকে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘মন্দিরে দর্শনের জন্য গিয়েছিলাম। মন্দিরের মূলদ্বার বন্ধ ছিল। কারণ, ভিতরে তখন খুব ভিড় ছিল। হঠাৎই ভিতর থেকে হুড়মুড় করে বেরিয়ে আসতে থাকেন পুণ্যার্থীরা। একে অন্যকে ধাক্কা দিয়ে ছুটছিলেন। আমার মাথা মাড়িয়ে দিলেন। আমাদের বাচ্চাদের শরীরের উপর দিয়েও ছুটে গেলেন। দেহ ছড়িয়ে পড়ে ছিল।’’ কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। বিহার থেকে আসা আর এক পুণ্যার্থী জানান, হঠাৎই মন্দিরে বহু পুণ্যার্থী জড়ো হন। তাঁরা একে অপরকে ধাক্কা দিতে শুরু করেন। ভিড়ের চাপে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে গিয়েছে ওই ব্যক্তির। তাঁর কথায়, ‘‘ছুটে পালানোর সময়ে লোকজন পড়ে যান।’’
পাহাড়ের কোলে রয়েছে মনসাদেবী মন্দির। মূল মন্দিরে যাওয়ার পথে সিঁড়িতে হয়েছে ধাক্কাধাক্কি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, গুজব ছড়ানোর কারণে ভক্তদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। হরিদ্বারের আইজি (আইনশৃঙ্খলা) নীলেশ ভার্নের কথায়, ‘‘বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে, এই গুজব ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সেই আতঙ্ক থেকেই এই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।’’ মন্দিরের সিঁড়িতে পড়ে যান কয়েক জন ভক্ত। তাঁদের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আরও অনেকে একে অপরের গায়ের উপর পড়েন। প্রসঙ্গত, শ্রাবণ মাসে হরিদ্বারে ভিড় হয় বেশি। সারা দেশ থেকে ভক্তেরা এই শহরে এসে গঙ্গার জল নেন। কাঁওয়াড়যাত্রীদেরও ভিড় লেগে থাকে। মনসাদেবী মন্দিরে তাই রবিবার সকালে ভিড় ছিল বেশি। তাতেই বিপত্তি। এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামির সরকার।