US India Tariff Row

ট্রাম্পের আশ্বাসে নিশ্চিন্ত নয়, বরং সাবধানি নয়াদিল্লি, মোদীর দু’লাইনের বার্তাতেও রয়েছে সেই ইঙ্গিত! কোন পথে সম্পর্ক

ভারত নিয়ে সুর নরম করেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, ভয়ের কোনও কারণ নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে তাতে বরফ গলছে না। মোদী নিজেও সতর্ক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০০
Share:

(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুর নরম করলেও এখনই তাঁর উপর ভরসা করতে নারাজ নয়াদিল্লি। বরং এতে আরও সাবধানি হয়ে গিয়েছেন কর্তারা। ট্রাম্প কোন পথে এগোন, তা দেখতে আরও খানিকটা অপেক্ষা করতে চাইছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ট্রাম্পের ইতিবাচক বক্তব্যের জবাবে যে দু’লাইনের পোস্টটি করেছেন, তাতেও সাবধানি পদক্ষেপের ইঙ্গিত রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারত সরকারের আধিকারিকদের উল্লেখ করে ব্লুমবার্গ এই তথ্য জানিয়েছে।

Advertisement

রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। তার পর মোদী চিনে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসি়ডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে দেখা করেন। চিন-রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতাকে কটাক্ষ করে সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘‘ভারত আর রাশিয়াকে আমরা চিনের অন্ধকারে হারিয়ে ফেলেছি।’’ তবে এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি মতবদল করেন। ভারতের সংবাদ সংস্থাকে জানান, ভয়ের কোনও কারণ নেই। মোদীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। ভারতের সঙ্গে আমেরিকার ‘বিশেষ’ সম্পর্ক রয়েছে। মোদীকে ‘মহান প্রধানমন্ত্রী’ বলেও উল্লেখ করেন ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের জবাব দিয়ে মোদী সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুভূতি এবং আমাদের সম্পর্ক নিয়ে ওঁর ইতিবাচক বক্তব্যের প্রশংসা করছি। আমরা এর সম্পূর্ণ প্রতিদান দেব।’’ দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এমন বক্তব্যে অনেকেই মনে করছিলেন, বরফ হয়তো এ বার গলবে। কিন্তু সাউথ ব্লক এত সহজে গলে যেতে রাজি নয়। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোদী ট্রাম্পের প্রশংসা করলেও তাঁকে আগের মতো আর ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেননি। এটাই তাঁর সাবধানতার প্রধান ইঙ্গিত। ভারত সরকারের এক আধিকারিক এ প্রসঙ্গে জানান, ট্রাম্পের সুর নরম হলেও আদৌ তা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা নয়। তাই আরও নিশ্চয়তার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। তার আগে কোনও পদক্ষেপের কথা ভাবছে না নয়াদিল্লি। বিশেষজ্ঞদের একাংশেরও মত, ট্রাম্প সুর নরম করায় ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে আচমকা নাটকীয় ভাবে কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Advertisement

ট্রাম্প ইতিবাচক হলেও তাঁর প্রশাসেনর আধিকারিকেরা সুর নরম করেননি। বরং ভারতবিরোধী অবস্থানে তাঁরা অনড়। ট্রাম্পের পরামর্শদাতা পিটার নাভারো বার বার দাবি করছেন, ইউক্রেনে প্রাণহানির জন্য ভারত দায়ী। নিজেদের লাভের কথা ভেবে রাশিয়ার কাছ থেকে তারা তেল কিনছে। ভারতকে হুমকিও দিয়েছেন নাভারো। অনেকের মতে, যদি সত্যিই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ভাবনা থাকত, তবে ট্রাম্পের আধিকারিকেরাও কিছুটা নরম হতেন। ভারতীয় পর্যবেক্ষকদের দাবি, মোদীর সঙ্গে পুতিন এবং জিনপিঙের ঘনিষ্ঠতা দেখেই ট্রাম্প সুর নরম করেছেন। কিন্তু যে কোনও মুহূর্তে তিনি অবস্থান বদল করতে পারেন। অন্য দিকে, শুল্কযুদ্ধের আবহে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ শুক্রবার জানিয়ে দেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি বন্ধ করার কোনও পরিকল্পনা এখনই নেই মোদী সরকারের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement