Bengaluru Money Heist

তিন মাসের পরিকল্পনা, ১৫ দিন রেকি! কী ভাবে ক্যাশ ভ্যানে ডাকাতির ছক কষেছিলেন ধৃত কনস্টেবল?

গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সিএমএস ইনফোসিস্টেম লিমিটেড নামে এক সংস্থার ক্যাশ ভ্যান থেকে লুট হয় ৭.১১ কোটি টাকা! সেই ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। তিনিই এই লুটের ঘটনার মূল পান্ডা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:১২
Share:

সিএমএস ইনফো সিস্টেম লিমিটেড নামক সংস্থার এই গাড়ি থেকেই লুট হয় সাত কোটি টাকার বেশি। — ফাইল চিত্র।

ছ’রাজ্যে তল্লাশি, ২০০ জন পুলিশ, ফোনের তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজের পাহাড়— ৭২ ঘণ্টার চেষ্টায় রহস্যভেদ হল বেঙ্গালুরুর এটিএমের ক্যাশ ভ্যান থেকে কোটি কোটি টাকা লুটের রহস্য! এই ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তকারীদের ধারণা, আরও দু’-তিন জন থাকতে পারে ওই চক্রে! তবে লুটের ঘটনার মূল মাথা পুলিশের জালে। সূত্রের খবর, ধৃত পুলিশ কনস্টেবলই ছিলেন গোটা ঘটনার নেপথ্যে। তিনি সাজিয়েছিলেন লুটের চিত্রনাট্য।

Advertisement

গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সিএমএস ইনফো সিস্টেম লিমিটেড নামে এক সংস্থার ক্যাশ ভ্যান থেকে লুট হয় ৭.১১ কোটি টাকা! জানা যায়, দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর এক উড়ালপুলের উপর আটকানো হয়। দুষ্কৃতীরা নিজেদের ‘আরবিআই কর্তা’ বলে পরিচয় দিয়ে কর্মীদের জানায়, আরবিআইয়ের নির্দেশিকা লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই কারণে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন, তাই কর্মীদের যেতে হবে থানায়। সেই কথা বিশ্বাস করেন সেই সময় ক্যাশ ভ্যানের সঙ্গে থাকা সিএমএস-এর তিন কর্মী।

ওই কর্মীদের নিয়ে একটি গাড়িতে ওঠে দুই দুষ্কৃতী। বাকিদের মধ্যে দু’জন উঠে পড়ে ক্যাশ ভ্যানে। বাকিরা ছিল মারুতিতে। তার পরেই তিনটি গাড়ি রওনা দেয় থানার উদ্দেশে। অভিযোগ, কিছু পথ যাওয়ার পর গাড়ি থেকে তিন কর্মীকে নেমে যেতে বলা হয়। জানানো হয়, তাঁরা যেন থানায় পৌঁছে যান। অন্য দিকে, ক্যাশ ভ্যানটির চালককে বলা হয়, ‘‘থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে টাকা ভর্তি বাক্সগুলি আরবিআই অফিসে নিয়ে যেতে হবে।’’ রাস্তার মধ্যে নামিয়ে দেওয়া হয় ক্যাশ ভ্যানের চালককে। তার পরে বন্দুক দেখিয়ে চালককে নির্দেশ দেওয়া হয় ভ্যানে থাকা ক্যাশবাক্সগুলি মারুতি এবং অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য। তার পরে চালককে রেখেই টাকা লুট করে পালায় দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমেই ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। শুধু তা-ই নয়, ঘটনাস্থলের মোবাইলের টাওয়ারের তথ্যও পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে যাচাই করে। সেই সব থেকেই উঠে আসে গোবিন্দরাজ নগর থানার কনস্টেবল আন্নাপ্পা নায়েকের নাম। এ ছাড়াও, সিএমএস সংস্থার এক প্রাক্তন কর্মী এবং ওই ক্যাশ ভ্যানের ইনচার্জকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত তিন জনকে জেরা করে জানা যায় ঘটনায় জড়িত আরও তিন জনের নাম। ধৃতদের ডেরায় তল্লাশি চালিয়ে এখনও পর্যন্ত লুট হওয়া টাকার মধ্যে ৬.২৯ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের অনুমান, বাকি টাকা মিলবে অধরা দুষ্কৃতীদের থেকেই।

তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, তিন মাস ধরে পরিকল্পনা করা হয় ওই লুটের। ১৫ দিন ধরে ঘটনাস্থল রেকি করেন ধৃতেরা। কোন কোন এলাকায় সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে, তার খোঁজ করা হয়। সেই সঙ্গে জোগাড় করা হয় একাধিক গাড়ির জন্য ভুয়ো নম্বরপ্লেট। শুধু তা-ই নয়, কেউ যাতে তাঁদের মধ্যেকার কথোপকথোন ধরতে না-পারেন, সেই কারণে সব আলোচনাই হত হোয়াট্‌সঅ্যাপে। আর গোটা পরিকল্পনাই ছিল আন্নাপ্পার। কী ভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়, তার প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন তিনিই!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement