নারী পাচারের শিকার হতে হয়েছিল তাঁকে। দিনগুলোর কথা ভাবলেও শিউরে ওঠে শরীর, ভয়ে-যন্ত্রণায় চোখ বন্ধ করে ফেলেন তিনি। সেই বিভীষিকাময় দিনগুলো যেন তাড়া করে বেড়ায়!
অবশেষে বহু বছর পর বাতাসে যেন একটু অক্সিজেন। অন্ধকার দুনিয়ায় একচিলতে সোনা রোদ। মহারাষ্ট্রের মহিলা কমিশন ও রাজ্য পুলিশের তৎপরতায় সম্প্রতি একটি যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাঁকে। ছয় বছরের অন্ধকারের পর একটি জামাকাপড়ের কারখানায় ‘জীবন’ খুঁজে পেয়েছেন সেই নির্যাতিতা। কিন্তু বাকিরা? এখনও যে এই অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছে দেশের হাজার হাজার অসহায় মেয়ে! তাঁদের কী হবে? সেই ভাবনা থেকেই চিঠি লেখা। খামের উপর ঠিকানা— সাউথ ব্লক, রাইসিনা হিলস।
আরও পড়ুন: ‘মাথার পাশ থেকে রক্ত চুঁইয়ে পড়ছিল, ভয়েই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল’
যৌনপল্লির পাশবিক নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন সেই নির্যাতিতা। রাখির শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি, পাচার হওয়া মেয়েদের উদ্ধার করার আর্জিও জানান তিনি। জানান, কী ভাবে ওই যৌনপল্লিতে পাচারকারীরা তাঁকে বিক্রি করে দিয়েছিল। সেখানে পশুর থেকেও নিকৃষ্ট ভাবে অত্যাচার করা হত তাঁর উপর। রোজই মারধর করা হত।
গতকালই তাঁর সেই দু’পাতার চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন মহারাষ্ট্র মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহাতকর। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে ওই নির্যাতিতা জানান, শেষ ছয় বছরে বাঁচার সমস্ত আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। মনে হত, এই পাশবিক নির্যাতন ভোগ করতে করতে একদিন এই যৌনপল্লিতেই মরে যেতে হবে তাঁকে।
আরও পড়ুন:প্রেমিকা-সহ ধরা দিলেন মাওবাদী নেতা বিজয়
সেই অন্ধকার জীবন থেকে বেরিয়ে এখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর একটাই আর্জি, নিজের বোন ভেবে পাচারকারীদের হাত থেকে অসহায় মেয়েগুলোকে উদ্ধার করুন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজয়া জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ওই চিঠি গ্রহণ করেছেন। এবং শীঘ্রই তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।