(বাঁ দিকে) উদ্ধব ঠাকরে এবং একনাথ শিন্দে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পুরসভা ভোটের আগে মুম্বইয়ে আবার দশেরা উৎসবের লড়াইয়ে উদ্ধব ঠাকরে এবং একনাথ শিন্দের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার দুই শিবির। প্রয়াত পিতা বালাসাহেব ঠাকরের রীতি মেনেই বৃহস্পতিবার শিবাজি পার্কে দশেরা পালন করেছেন শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব। অন্য দিকে, আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী শিন্দে ‘দশেরা র্যালি’ করেন গোরেগাঁও ইস্টের নেসকোতে। দুই সেনার দশেরা জমায়েত থেকেই পরস্পরকে নিশানা করা হয়েছে।
শিবাজি পার্কের সভায় শিন্ডেসেনার সহযোগী বিজেপিকে অ্যামিবার সঙ্গে তুলনা করে ‘ছদ্ম হিন্দুত্ববাদী’ বলেন উদ্ধব। তাঁর কথায়, ‘‘এককোষী ওই জীবের মতোই ওরা সিউডোপডের (ছদ্ম পা) সাহায্যে সংখ্যাবৃদ্ধি করে। এরা যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবে জোট তৈরি করে এবং কাজ শেষ হয়ে গেলে, অন্য জোটে চলে যায়।’’ অন্য দিকে, শিন্দে অভিযোগ করেন কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বালাসাহেব ঠাকরের হিন্দুত্ববাদী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন উদ্ধব। তাঁর খোঁচা, ‘‘হিন্দুত্ব কি টি-শার্টের মতো? এক বার পরলেন, তার পরে খুলে ফেললেন।’’ চলতি বছরের শেষেই বৃহন্মুম্বই পুরসভার (বিএমসি) ভোট হওয়ার কথা। দেশের বৃহত্তম এই পুরসভায় মূল লড়াই দুই সেনার মধ্যেই। তারই ছাপ পড়েছে দশেরার জমায়েতে।
শিবসেনা বিধায়কদের বড় অংশের বিদ্রোহের জেরে উদ্ধব ২০২২ সালের ৩০ জুন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারিয়েছিলেন। এর পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে শিন্দে গোষ্ঠীর কাছে খুইয়েছেন ‘শিবসেনা’ নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘তিরধনুক’। তবে বর্তমানে রাজ্য সরকারের পরিচালনাধীন থাকলেও এখনও বৃহন্মুম্বই পুরসভা কর্পোরেটরদের (কাউন্সিলর) বড় অংশের সমর্থন উদ্ধবের প্রতি। সম্প্রতি মরাঠি ভাষা রক্ষা এবং হিন্দির ‘আগ্রাসন’ রোখার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ধব এবং তাঁর তুতো ভাই তথা মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান রাজ ঠাকরে একসঙ্গে রাজনীতির পথে হাঁটার বার্তা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বিএমসি ভোটে বিজেপি-শিন্ডেসেনা-এনসিপি (অজিত) জোট কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টানা ২৫ বছর বৃহন্মুম্বই পুরসভায় ক্ষমতায় ছিল অবিভক্ত শিবসেনা। ২০২২ সালের মার্চ মাসে এই পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়। তার পর গত তিন বছর নির্বাচন না হওয়ায় ক্ষমতাসীন জোটকে নিশানা করেছে উদ্ধবসেনা ও কংগ্রেসের মতো বিরোধীরা।