৬৫-র স্মৃতি ফেরাচ্ছে পাক গোলাবর্ষণ

গ্রামে ফুরফুরে মেজাজের লোক হিসেবে পরিচিতি আছে হাজির। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ে তাঁর বয়স ছিল আট। কিন্তু সেই সময়ে যে‌ গোটা গ্রাম যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে গিয়েছিল সে কথা মনে আছে তাঁর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চজলা (পুঞ্চ) শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৪
Share:

১৯৬৫ ভারত-পাক যুদ্ধের সময়। —ফাইল চিত্র।

রাতটা ছিল ২৩ ফেব্রুয়ারির। কাঁপতে কাঁপতে ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলেন হাজি গুলাম আব্বাস। জম্মু-কাশ্মীরের মেন্ডার সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে চজলা গ্রামে তাঁর বাড়িতে তখন পড়তে শুরু করেছে পাকিস্তানি মর্টারের শেল।

Advertisement

গ্রামে ফুরফুরে মেজাজের লোক হিসেবে পরিচিতি আছে হাজির। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ে তাঁর বয়স ছিল আট। কিন্তু সেই সময়ে যে‌ গোটা গ্রাম যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে গিয়েছিল সে কথা মনে আছে তাঁর। তার পর থেকে মাঝে মাঝেই গোটা এলাকায় চজলার মতো সব গ্রামই লড়াইয়ের ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।

হাজির বক্তব্য, ‘‘যুদ্ধের স্মৃতি হাজার বছরেও মোছা যায় না।’’ সংঘর্ষের সময়ে নিজের কাদা আর কাঠে তৈরি বাড়িতে থাকতেই নিরাপদ বোধ করেন হাজি। তাঁর মতে, ‘‘১৯৬৫ সালের যুদ্ধের চেয়েও যেন এ বার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।’’ ২৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে পরিবারের বাকি সদস্যদের সরিয়ে দেন তিনি। গ্রামে কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়েছিল প্রশাসন। সেগুলির পাশাপাশি স্থানীয় কয়েক জনও তাঁদের গাড়িতে প্রতিবেশীদের সরান। তবে হাজির মতো কয়েক জন থেকে গিয়েছিলেন গ্রামেই। চজলা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি ধর্মস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৪০০ জন। হাজির মতে, ‘‘এমন সংঘর্ষের সময়ে বিশ্বাসই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। তা না হলে অনেক দিন আগে যুদ্ধের ভয়েই আমরা মরে যেতাম।’’

Advertisement

এমন পরিস্থিতিতেও সরকার এলাকার বাসিন্দাদের বিশেষ সাহায্য করে না। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা একটি ‘কমিউনিটি কিচেন’ চালু করেছেন। আশপাশে হাসপাতালও নেই। চিকিৎসকের সাহায্য পেতে প্রায় সাত কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে বাস ধরতে হয়। যাঁদের পক্ষে অন্য এলাকায় সরে যাওয়া সম্ভব তাঁরা অনেক আগেই সরে গিয়েছেন। হাজির কটাক্ষ, ‘‘ইদ, দিওয়ালি ও হোলির মতো উৎসবে যেন গুলিবর্ষণ আর শেল ছোড়াই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দু’দেশ লড়াই করে। আমরা নিজেদের জীবনের জন্য প্রার্থনা করি।’’

এ দিনও জম্মুর পুঞ্চ ও আখনুর সেক্টরে হামলা চালিয়েছে পাক সেনা। জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন