ভারতে নির্মিত ইঞ্জিনবিহীন সুপারফাস্ট ট্রেন।
জমি সঙ্কটের জেরে মাঝপথে থমকে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের বুলেট ট্রেন প্রকল্প। তবে, হাল ছাড়তে নারাজ ভারত সরকার। তাই অত্যাধুনিক সুপারফাস্ট ট্রেন চালু করতে আর জাপানের জন্য অপেক্ষা নয়। বরং দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি, ইঞ্জিনবিহীন ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিল তারা। সব ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। আর এক সপ্তাহ পরেই হাতে অত্যাধুনিক সুপারফাস্ট ট্রেন চলে আসবে। যা দেখতে অবিকল জাপানের বুলেট ট্রেনের মতো। তবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। তাও আবার ইঞ্জিনবিহীন। তবে সেই ট্রেন আপাতত যাত্রী পরিবহণে ব্যবহৃত হবে না। শুধুমাত্র পরীক্ষামূলক যাত্রার জন্য নামানো হবে। মোরাদাবাদ-বরেলী এবং কোটা-সাওয়াই মাধোপুর রুটে ট্রেনটির গতি পরীক্ষা করে দেখা হবে আগামী মাসের শুরুতেই।
চেন্নাইয়ে অবস্থিত ট্রেনের কোচ নির্মাণকারী সংস্থা আইসিএফের জেনারেল ম্যানেজার সুধাংশু মণি জানিয়েছেন, ১৬ কামরার রেকটি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। নির্মাণে খরচ পড়েছে ১০০ কোটি টাকা। আপাতত নাম রাখা হয়েছে ‘ট্রেন-১৮’। তবে পুরোপুরি স্বচালিত। ইঞ্জিন ছাড়াই যাত্রা করতে সক্ষম। এখনও পর্যন্ত একটি মাত্র রেক তৈরি করা হয়েছে। আগামী বছর মার্চ নাগাদ দ্বিতীয়টি তৈরি করা হবে। তখন একটু হলেও নির্মাণের খরচ কমবে বলে আশা।
শতাব্দী এক্সপ্রেসের দিল্লি-ভোপাল, চেন্নাই-বেঙ্গালুরু এবং মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে দিনভর চালানোর জন্য ট্রেনটি তৈরি করা হয়েছে। ১৬টি কামরার প্রত্যেকটিতে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সাধারণ ট্রেনগুলির তুলনায় এর গতিবেগ প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। রয়েছে হাঙ্গেরি থেকে আনা উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি ইলেক্ট্রো-নিউম্যাটিক ব্রেক প্রযুক্তি। যা কিনা এতদিন শুধুমাত্র মেট্রো এবং সাবওয়ে পরিবহণে ব্যবহৃত হত।
কেমন দেখতে ইঞ্জিনবিহীন ট্রেন? দেখুন ভিডিয়োয়
আরও পড়ুন: বাঁধের হাল নিয়ে রাজ্যওয়াড়ি তথ্য বিনিময়ের প্রস্তাব
আরও পড়ুন: ৬ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকছে মুম্বই বিমানবন্দর, বাতিল ৩০০ উড়ান
সুধাংশু মণির দাবি, ‘‘এই ধরনের উন্নতমানের রেক বিদেশ থেকে আমদানি করতে গেলে খরচ পড়ত ১৭০ কোটি টাকা। ভারতে যে সমস্ত সংস্থা রয়েছে তাদের দায়িত্ব দিলে রেক হাতে পেতে ৩ বছর সময় লেগে যেত। সে পথে না গিয়েই ভাল হয়েছে। অনেকটা খরচ বাঁচানো গিয়েছে।’’
ট্রেনটিতে দু’টি এগ্জিকিউটিভ ক্লাসের কামরাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যার আসনগুলি ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরে। যাত্রীরা যাতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন তাই নাকি এমন উদ্যোগ। ওই বিশেষ ধরনের আসনগুলি স্পেন থেকে আমদানি করা হয়েছে। তবে ব্রেক, ট্রান্সফর্মারস এবং আসনগুলিই শুধু বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। বাকি সবকিছু ভারতে তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়াও যাত্রাপথে যাত্রীরা বিশেষ ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন বলে জানা গিয়েছে। গুরুতর সমস্যায় পড়লে সোজা গিয়ে চালকের দরজায় টোকা মারতে পারবেন তাঁরা। চোখ রাখতে পারবেন প্যানেলে।