তেজস যুদ্ধবিমান। —ফাইল চিত্র।
ভারতে তৈরি তেজস যুদ্ধবিমানের জন্য মার্কিন ইঞ্জিন সরবরাহ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি করল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল (হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্যাল লিমিটেড)। বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে টানাপড়েন আর শুল্ক-সংঘাতের আবহেই মার্কিন সংস্থা জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) অ্যারোস্পেসের সঙ্গে এ সংক্রান্ত ৬৭৩৭০ কোটি টাকার চুক্তি সই হয়েছে শুক্রবার।
ওই চুক্তি অনুযায়ী জিই অ্যারোস্পেস সংস্থাটি ‘তেজস মার্ক-১এ’ যুদ্ধবিমানের জন্য প্রয়োজনীয় ১১৩টি এফ-৪০৪ ইঞ্জিন সরবরাহ করবে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ৯৭টি ৪.৫ প্রজন্মের হালকা ‘মাল্টি রোল সুপারসনিক’ যুদ্ধবিমান ‘তেজস মার্ক-১এ’ কেনার চুক্তি করেছিল। ২০২৭-২৮ থেকে সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা। ছ’বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন হবে। মার্কিন ইঞ্জিন পেলে সময়মতো যুদ্ধবিমান সরবরাহে সমস্যা হবে না বলে হ্যাল সূত্রের খবর।
চলতি বছরের জুন মাসে হ্যালের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডিকে সুনীল তেজস সরবরাহে বিলম্বের জন্য আমেরিকার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ওই যুদ্ধবিমানের এফ৪০৪ ইঞ্জিন সরবরাহকারী মার্কিন সংস্থা ‘জিই অ্যারোস্পেস’-এর দেরির কারণেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানগুলি পৌঁছে দিতে দেরি হচ্ছে তাঁদের। প্রসঙ্গত, ছ’দশকেরও বেশি সময় একটানা কাজ করে সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় অবসর নিয়েছে রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান মিগ-২১। ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আপাতত যে যুদ্ধবিমান বহর রয়েছে, তার মধ্যে তেজস মার্ক-১, রাফাল এবং সুখোই-৩০ এবং মিগ-২৯ অন্যতম।
২০৩১ সালের মধ্যে যুদ্ধবিমান বহর সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এ ক্ষেত্রে মোদীর ‘আত্মনির্ভরতা’র স্লোগান অনুসরণ করে মিগ-২১-এর পরিবর্ত হবে ‘তেজস মার্ক-১এ’। কিন্তু সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন ‘সময়সীমা’ নিয়ে। ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা ওজনের, ‘মাল্টি রোল সুপারসনিক’ যুদ্ধবিমান তেজস নানা ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম। এর ৬৫ শতাংশেরও বেশি যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম ভারতীয় সংস্থাগুলির তৈরি। চিনের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের তুলনায় তেজসের নয়া সংস্করণ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে এগিয়ে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। পরবর্তী ধাপে তেজস ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে নৌসেনারও। কিন্তু মার্কিন ইঞ্জিন সরবরাহে বিলম্ব হলে পুরো পরিকল্পনাই দীর্ঘসূত্রিতায় আক্রান্ত হতে পারে।