—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়েছে প্রাথমিক স্তর থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’ বা ডিআরডিও)-র তৈরি মনুষ্যবাহিত ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের (সামরিক পরিভাষায় যাক নাম, ‘ম্যান-পোর্টেবল অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল’ বা এমপিএটিজিএম) কার্যকারিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে সেনা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, আগামী বছর থেকেই সেনা হাতে ওই ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দেওয়া হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার গত মাসে আমেরিকা থেকে ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র জ্যাভলিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জরুরি ক্রয় কর্মসূচির মাধ্যমে সেনাবাহিনী ১২টি লঞ্চার এবং ১০৪টি ক্ষেপণাস্ত্র কিনবে। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে জ্যাভলিনের বিকল্প হয়ে উঠবে ডিআরডিও-র তৈরি এমপিএটিজিএম। জ্যাভলিনের মতোই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক জন মাত্র সেনা এটিকে ব্যবহার করতে পারেন। তবে ট্রাইপড এবং ‘কমান্ড লঞ্চ ইউনিট’ (সিএলইউ)-সহ পুরো ব্যবস্থাটি বহন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য দু’জন সেনা প্রয়োজন। ক্ষেপণাস্ত্রটির একটি লঞ্চার রয়েছে, যেটি কাঁধে রেখে নিখুঁত লক্ষ্যে এমপিএটিজিএম-কে ছোড়া যায়। ঠিক যেমন ছোড়া যায় আমেরিকার তৈরি ‘শোল্ডার ফায়ার্ড’ জ্যাভলিনকে।
৩০ কিলোগ্রামের এই ক্ষেপণাস্ত্র সহজে বহনযোগ্য। শত্রুর ট্যাঙ্ককে সহজে চিহ্নিত করতে ‘ইনফ্রারেড ভিশন’ রয়েছে তাতে। পাল্লা ২০০ মিটার থেকে ৪ কিলোমিটার। অন্য দিকে, জ্যাভলিনের পাল্লা আড়াই কিলোমিটারের সামান্য বেশি। বর্তমানে ভারতীয় সেনার হাতে সোভিয়েত জমানার ‘কনকার’ এবং ‘মিলান’ ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। দ্বিতীয় প্রজন্মের ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলিতে ব্যবহৃত ‘ভিস্যুয়াল লক’ প্রযুক্তিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত না-হানা পর্যন্ত পরিচালনাকারী সেনা জায়গা বদলাতে পারেন না। কিন্তু মার্কিন জ্যাভলিনের মতো ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র অন্যতম উদাহরণ এমপিএটিজিএম-এ রয়েছে ‘ফায়ার-এন্ড-ফরগেট’ প্রযুক্তি। এর ফলে শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক নিশানাকারী ভারতীয় সেনা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেই দ্রুত স্থানত্যাগ করতে পারবেন। তাঁর প্রাণের ঝুঁকিও কমবে।