রাজনাথ সিংহ, বায়ুসেনা প্রধান বি এস ধানোয়া এবং নরেন্দ্র মোদী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভারতের আকাশে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়েছে, এই খবর আসা মাত্রই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নৌ এবং বায়ুসেনা প্রধানের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে নর্থ ব্লকে দেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সকালেই দেশের তিন রাজ্যের আটটি বিমানবন্দরে উড়ান নিষিদ্ধ করার ঘোষণা করেছিল নয়াদিল্লি। যদিও পরে তুলে নেওয়া হয় সেই নিষেধাজ্ঞা।
সাতসকালেই ভারতের কাছে খবর আসে আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাক যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়ছে ভারতের আকাশে। ভারত যে এই বিমান হামলার জন্য প্রস্তুত ছিল, তার প্রমাণ মিলেছে একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনায়। সেই খবর পাওয়া মাত্র বিজ্ঞান ভবনে একটি অনুষ্ঠান চলাকালীনই বেরিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে একটি প্রশ্নোত্তরপর্ব চলছিল তখন। তাঁর কাছে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে একটি চিরকুট আসা মাত্রই হাত নেড়ে বেরিয়ে যান মোদী। এর পরই নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি জরুরি বৈঠকের ডাক দেন মোদী । বিজ্ঞান ভবনের অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠোরও।
এর আগে নিজের বাড়িতেও একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী । সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল, বায়ুসেনা প্রধান-সহ দেশের অন্যান্য বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরাও।
ভারত পাক সম্পর্কের উত্থান পতন সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন?
আরও পড়ুন: আত্মরক্ষার জন্য অভিযান ভারতের, চিনের মাটিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা সুষমার
প্রতিরক্ষায় যে নয়াদিল্লি কোনও খামতি রাখতে রাজি নয় , তার প্রমাণ মেলে এর পরই। বিমান হামলার খবর পাওয়া মাত্র জম্মু ও কাশ্মীর এবং পঞ্জাবের সমস্ত বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। এর মধ্যে ছিল শ্রীনগর, লে এবং জম্মু, চন্ডীগড় এবং অমৃতসর বিমানবন্দর। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উড়ানও এই এলাকার বিমানবন্দরে না নামিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল দেশের অন্যান্য নিরাপদ বিমানবন্দর দিয়ে। একের পর এক বেসরকারি বিমানসংস্থাও বিমান বাতিলের খবর জানিয়ে দেয় যাত্রীদের। যদিও বেলা বাড়তে তুলে নেওয়া হয় সেই নিষেধাজ্ঞা। অন্য দিকে লাহোর, মূলতান, ফয়জলাবাজ, শিয়ালকোট এবং ইসলামাবাদ বিমানবন্দরেও সমস্ত উড়ান বন্ধ রাখার কথা জানায় পাকিস্তান।
একই সঙ্গে সকালেই নর্থ ব্লকে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র) প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব সব প্রতিরক্ষা দফতরের গুরুত্বপূর্ণ কর্তাব্যক্তিরা। এই বৈঠকেই বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সকে ভারত-পাক সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে আকাশসীমা লঙ্ঘন ৪ পাক যুদ্ধবিমানের, ১টিকে গুলি করে নামাল বায়ুসেনা
এরই মধ্যে চিনে উড়ে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সেখানে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চিনের বিদেশমন্ত্রীকে পুলওয়ামা হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি বুঝিয়ে ইতিমধ্যেই কূটনৈতিক সাফল্য পেয়েছেন তিনি।