গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সংঘর্ষের সময় শহিদ ভারতীয় জওয়ানদের স্মৃতিকে সেলাম জানিয়ে একটি নতুন গান প্রকাশ করেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনী। গালওয়ান সংঘর্ষে মোট ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিলেন। চিনের তরফে ৪৩ জন হতাহতের খবর পাওয়া গিয়েছিল। গালওয়ান সংঘর্ষের প্রথম বর্ষপূর্তিতে ভারতীয় সেনার ওই শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘গালওয়ান কে বীর’ বলে গানটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এক বছর পেরিয়ে গেলেও ভারত-চিনের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনার নিষ্পত্তি এখনও ঘটেনি। দু’দেশের সেনাবাহিনীই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর অবস্থান করছে।
ওই গানে গালওয়ানের বিপদসঙ্কুল এলাকাগুলিতে ভারতীয় সেনার নিরলস পরিশ্রমের ছবি যেমন তুলে ধরা হয়েছে, তেমনই দেশের সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত জওয়ানদের সহনশীলতা, বীরত্ব এবং ত্যাগের কথাও বলা হয়েছে। গানটি গেয়েছেন জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত গায়ক পদ্মশ্রী হরিহরণ। তাঁর কথায়, ‘‘গালওয়ানের দুঃসাহসিক শহিদ জওয়ান এবং সেনাবাহিনীর জন্য গানটি গাইতে পারা আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দের। গানটি তৈরিও করা হয়েছে অসাধারণ ভাবে। দেশভক্তির এই গান গাইতে পারা আমার সৌভাগ্য।’’
‘গালওয়ান কে বীর’ গানে ব্যবহৃত দৃশ্যগুলি হরিহরণের গানের সঙ্গে উপযুক্ত সঙ্গত করেছে। যাতে বোঝা যায়, সেনাবাহিনী কী ভয়াবহ ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও লড়াইয়ের জন্য নিজেদের কত কঠোর ভাবে প্রস্তুত করে। সামরিক অস্ত্র ও সঙ্ঘাতের বিবিধ রণকৌশলে শিক্ষিত সাহসী সৈনিকরা শত্রুর থেকে এক কদম এগিয়ে থাকার জন্য কী কী নিখুতঁ পদক্ষেপ করেন, তা-ও গানের দৃশ্যে তুলে ধরা হয়েছে। ‘গালওয়ান কে বীর’-এর ভিডিও পরিচালক এবং সংকলক গিরিশ মালিকের কথায়, ‘‘ভারতের সীমান্ত রক্ষার জন্য সৈন্যদের কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তা দেখাতে চেয়েছিলাম। এ বার দেখুন তাঁরা কী কী কঠিন কাজ করেন!’’ গিরিশের বক্তব্য, ‘‘এই কাজটার উদ্দেশ্যই ছিল আমাদের অভিপ্রায় ছিল, আমাদের সেনাবাহিনীর সাহসিকতার বিষয় দেখিয়ে সারা পৃথিবীর কাছে ভারতের শক্তিকে তুলে ধরা। গালওয়ান সংঘর্ষে একাধিক উদাহরণ দিয়ে সেনাবাহিনী সবরকম ভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছিল।’’
শহিদদের স্মৃতিতে বানানো সৌধ।
গানটির সুরকার বিক্রম ঘোষ। যিনি বলেছেন, ‘‘যখন আমরা দেশের কথা চিন্তা করি বা আমাদের মাতৃভূমির কথা ভাবি, তখন তার সঙঅগে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক থাকে না। দেশ আমাদের কাছে ‘মাটি’। সেই ‘মাটি’ যে সংবেদনশীলতা নিয়ে আসে, দেশ তার সঙ্গে যুক্ত। আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি, দেশপ্রেমের গানের সুর বলিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন। সুরের উচ্চতায় পৌঁছনোর আগে সেটি যেন খানিক ধীরলয়ে থাকে। এই গানে সেটাই করার চেষ্টা করেছি। হরিজির কণ্ঠ গানটার জন্য একেবারে যথাযথ ছিল। গিরিশও গানের দৃশ্যায়নে দুর্দান্ত কাজ করেছে। পুরো গানটা দেখার সময় গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল।’’