Indian Army

নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করল সেনা

সেনা জানায়, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি লঞ্চপ্যাডে এই অভিযান ১৩ নভেম্বরের। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনা এ ধরনের কোনও অভিযান চালায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

একেবারে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে (পিন পয়েন্ট) হামলা চালিয়ে গত শুক্রবার পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের জন্য তৈরি পাক সেনার একাধিক লঞ্চ প্যাড ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। সরকারি সূত্রের খবর, পাকিস্তানের প্ররোচনামূলক হামলার জবাব দিতে উরি, কেরান সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে জঙ্গি লঞ্চপ্যাডগুলি ছিল, তাদের বেশ কয়েকটি নষ্ট করে দিতে সক্ষম হয়েছে ভারত। সেনা সূত্রের মতে, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কেবল ওই লঞ্চপ্যাডগুলিতেই হামলা চালানো হয়। সে দিনের হানায় জঙ্গিদের একাধিক লঞ্চপ্যাড ছাড়াও পাক সেনার একাধিক বাঙ্কার, তেলের ডিপো, গোলা-বারুদের ঘাঁটিও নষ্ট করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেনার এই অভিযানের কথা প্রচার করা হয়। সংবাদসংস্থা পিটিআই-ও এই খবর প্রকাশ করার পরে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। তার পরেই সেনার তরফে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি লঞ্চপ্যাডে এই অভিযানের ঘটনা গত ১৩ নভেম্বর, শুক্রবারের। আজ, বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনা এ ধরনের কোনও অভিযান চালায়নি। পাশাপাশি সেনাপ্রধান এম এম নরবণে পাকিস্তানকে ঘুরিয়ে সতর্ক করে বলেছেন, ভারতে ঢোকার চেষ্টা করলে কোনও জঙ্গি বাঁচবে না।

সেনা সূত্রের মতে, উপত্যকায় প্রবল তুষারপাত শুরু হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি। পিছন থেকে তাদের সব রকম ভাবে মদত দিচ্ছে পাক সেনা। গত শুক্রবার ভোরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে গিয়ে একাধিক জঙ্গি মারা যায়। প্রতিশোধ নিতে তার পর থেকেই ৭৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ন্ত্রনরেখার বারামুল্লা, কেরান, উরি, দাওয়ার, নওগামে প্ররোচনা ছাড়াই জনবসতি লক্ষ্য করে হামলা চালাতে শুরু করে পাক সেনা। ওই হামলায় ভারতের চার সেনা জওয়ান, বিএসএফের এক অফিসার ও চার নাগরিক মারা যান। আহতদের মধ্যে রয়েছে দুই স্কুল পড়ুয়াও। ধাক্কা সামলে পাল্টা হামলা চালায় ভারতও। সূত্রের মতে, দু’দেশই ১০৫ ও ১৫৫ মিলিমিটার কামান ছাড়াও, অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল ও মর্টার দিয়ে হামলা চালায়। সূত্রের মতে, ভারতীয় সেনার হামলায় উরি ও কেরান সেক্টরে থাকা একাধিক জঙ্গি লঞ্চপ্যাড নষ্ট হয়ে যায়। ভারতীয় সেনার দাবি, হামলায় অন্তত সাত থেকে আট জন পাক সেনাও মারা গিয়েছে। যার মধ্যে দুজন স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের কম্যান্ডো। যারা মূলত পাক সেনার বর্ডার অ্যাকশন দলের সদস্য। মূলত এই বাহিনীর উপরেই জঙ্গিদের ভারতে সুরক্ষিত ভাবে অনুপ্রবেশ করানোর দায়িত্ব থাকে। চলতি বছরে ৪০৫২ বার পাক সেনা সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি ভারতীয় সেনার। এই সংখ্যক হামলার নজির গত দু’দশকে নেই। তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সীমান্তে পাক হামলা ক্রমশ বাড়ছে। ২০১৭ সালে ৯১৭টি সংঘর্ষবিরতির ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬২৯। ২০১৯ সালে যা বেড়ে হয় ৩১৬৮।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন