আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন রূপের পরীক্ষা সফল লাদাখে। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সেনা অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ব্যবহৃত হয়েছিল আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র। এ বার নতুন রূপে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল ভারতীয় সেনার সেই মিসাইল। আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন রূপের নাম দেওয়া হয়েছে আকাশ প্রাইম। সম্প্রতি লাদাখে তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল হয়েছে। পর পর দু’টি ‘শিকার’ ধরেছে সেনার নতুন অস্ত্র। দু’টি ড্রোন ধ্বংস হয়েছে আকাশ প্রাইমের হামলায়। বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে সেই খবর জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
ভারতীয় সেনার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম নির্ভরযোগ্য অঙ্গ আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ভূমি থেকে আকাশে (সারফেস টু এয়ার মিসাইল) ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিশানা করতে পারে। গত মে মাসে সিঁদুর অভিযানের সময়ে পাকিস্তানে হামলা চালাতে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল সেনা। সেই অস্ত্রকেই আরও উন্নত করে তোলা হয়েছে। সাড়ে চার হাজার মিটারেরও বেশি উচ্চতায় যাতে এই মিসাইল কাজ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করেছে সেনা। আকাশ প্রাইমে যোগ করা হয়েছে দেশে তৈরি রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি সিকার, যা রেডিয়ো সঙ্কেত পাঠাতে পারে এবং লক্ষ্যবস্তুকে অনুসরণ করে ধ্বংস করতে পারে।
লাদাখের ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় বৃহস্পতিবার এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। তীব্র বেগে ধেয়ে আসা দু’টি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে আকাশ প্রাইম। এত উচ্চতায় ক্ষেপণাস্ত্রের এই নতুন রূপটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এই প্রথম। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘লাদাখের উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে আকাশ অস্ত্রব্যবস্থার নতুন রূপ আকাশ প্রাইমের সফল পরীক্ষা করেছে ভারতীয় সেনা। দু’টি উচ্চগতির উড়ন্ত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক ছুঁল ভারত।’’
ডিআরডিও-র প্রাক্তন কর্তা বিজ্ঞানী প্রহ্লাদ রমারাও ১৫ বছর আগে এই আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা খুব বড় নয়। তবে আকাশপথে শত্রুর যে কোনও রকম হামলার জবাব দিতে সক্ষম এই মিসাইল। এতে বেশ কিছু বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা রয়েছে, যা সেনার ব্যবহারের উপযুক্ত। কৌশলগত এবং শক্তিশালী হামলায় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র বরাবর প্রশংসিত। প্রতি লঞ্চারে তিনটি করে আকাশ মিসাইল রাখা যায়। মিসাইলগুলি প্রায় ২০ ফুট উঁচু এবং তাদের ওজন ৭১০ কেজি। প্রতি মিসাইলে ৬০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড (বিস্ফোরক) থাকে।