পাকিস্তানি মহিলাকে ভিজ়িটর ভিসা দিচ্ছে কেন্দ্র, আদালতে জানাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। —প্রতীকী চিত্র।
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানিদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি এবং কূটনৈতিক ভিসা ছাড়া সকল প্রকার ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। ওই সমস্ত ভিসায় এ দেশে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের বিতাড়নের পদক্ষেপও করে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই সময় বিতাড়িত হন ৬২ বছর বয়সি পাকিস্তানি নাগরিক রাকশান্দা রাশিদও। প্রায় ৩৫ বছর আগে জম্মুর বাসিন্দা শেখ জহুর আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। এ বার রাকশান্দাকে ভিজ়িটর ভিসায় ভারতে আসার অনুমতি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের মাঝেই জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাকশান্দা। ভারত থেকে বিতাড়ন ঠেকাতে অন্তর্বর্তী কোনও নির্দেশের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে রাকশান্দাকে ‘এগ্জিট পারমিট’ ধরিয়ে দেয় প্রশাসন এবং অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত হয়ে তাঁকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অন্য দিকে, রাকশান্দার চার সন্তান জম্মু ও কাশ্মীরেই রয়ে যান। এই অবস্থায় গত ৬ জুন হাই কোর্ট নির্দেশ দেয় রাকশান্দাকে ফেরানোর জন্য পদক্ষেপ করতে হবে কেন্দ্রকে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক হাই কোর্টে জানিয়েছে, রাকশান্দাকে ভিজ়িটর ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আদালতে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি আদালতে জানান, বিষয়টি নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনার পরে এবং এই বিশেষ পরিস্থিতিকে বিবেচনা করে মহিলাকে ভিজ়িটর ভিসা দেওয়ার নৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের এই বক্তব্য শোনার পরে মামলাটির নিষ্পত্তি করে দিয়েছে আদালত। তবে এটি যে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তকে কোনও ভাবেই যেন দৃষ্টান্ত হিসাবে দেখা না হয়।
এই ঘটনার ক্ষেত্রে রাকশান্দা দীর্ঘমেয়াদি ভিসাতেই ভারতে বাস করছিলেন। ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৪ দিনের ভিজ়িটর ভিসায় ভারতে এসেছিলেন তিনি। তার পরে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা পান, যা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পুনর্নবীকরণ করতে হত। সেই থেকে টানা দীর্ঘমেয়াদি ভিসায় ভারতে বাস করতে থাকেন তিনি। মামলায় উঠে এসেছে, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি তাঁর দীর্ঘমেয়াদি ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছিল। তার আগেই, ৪ জানুয়ারি ওই ভিসা পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। তবে রাকশান্দার ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁর ভিসার মেয়াদ নতুন করে বর্ধিত হয়নি।