Indian Railway

স্বাভাবিক পরিষেবা চালু হলে বাতিল হবে বহু প্যাসেঞ্জার, এক্সপ্রেস ট্রেন

বহু এক্সপ্রেস ট্রন বদলে হচ্চে এক্সপ্রেস, এক্সপ্রেস হচ্ছে সুপার ফাস্ট। উঠে যেতে পারে লিঙ্ক ট্রেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ১৮:২৬
Share:

ট্রেন চালু হলে বদলে যাবে অনেক ব্যবস্থাই।

ধাপে ধাপে ‘আনলক’ প্রক্রিয়ায় বাস, মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছে। স্পেশাল ট্রেন চললেও স্বাভাবিক রেল পরিষেবা কবে থেকে চালু হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সেই অনুযায়ী খুব শীঘ্রই নয়া টাইম টেবিল জারি করতে চলেছে ভারতীয় রেল, যার নাম দেওয়া হয়েছে `জিরো বেসড’ টাইম টেবিল। নয়া সময় সূচিতে আমূল বদলে যেতে চলেছে মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের পদ্ধতি। এক দিকে বহু ট্রেন যেমন আপগ্রেড হচ্ছে, তেমনই উঠে যেতে পারে একাধিক পরিষেবা। রেল সূত্রে তেমনই খবর।

Advertisement

কেমন হতে পারে নয়া পরিষেবা? রেল বোর্ডের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩৬০টি প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে উন্নীত করে এক্সপ্রেস করা হতে পারে। একই ভাবে ১২০টি একপ্রেস ট্রেন বদলে যেতে পারে সুপার ফাস্ট ট্রেনের ক্যাটেগরিতে। তার জেরে স্টপেজ কমে যেতে পারে ১০ হাজার ২০০টি। অর্থাৎ একই ট্রেন উচ্চ ক্যাটেগরিতে উঠে যাওয়ায় এই স্টেশনগুলিতে ওই ট্রেনগুলি আর দাঁড়াবে না।

রেল বোর্ড সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই খসড়া প্রস্তুত। কোন কোন মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনকে উন্নীত করা হবে, সেই বিষয়টিও প্রায় চূড়ান্ত। শেষ পর্যায়ের আলোচনার পর জারি হবে এই সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তি। যদিও কবে ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে, সরকারের তরফে সে বিষয়ে নির্দেশিকা আসার উপরেও নির্ভর করছে নয়া সময়সূচির এই বিজ্ঞপ্তি।

Advertisement

আরও পড়ুন: সরকারি টাকায় পুজোর খরচ নয়, অনুদান মামলায় নির্দেশ হাইকোর্টের

কিন্তু এই ব্যবস্থায় রেলের আয় বাড়লেও ভাড়ার বোঝা চাপবে যাত্রীদের উপর। বর্তমান রেল ভাড়ার কাঠামোয় প্যাসেঞ্জার ট্রেন এবং লোকাল ট্রেনের ভাড়া প্রায় একই রকম। কিন্তু প্যাসেঞ্জার ট্রেন এক্সপ্রেস হয়ে গেলেই তার ভাড়া অনেকটা বৃদ্ধি হয়ে যায়। এক্সপ্রেস এবং সুপার ফাস্ট ট্রেনের মধ্যেও ভাড়ার বিস্তর ফারাক। ফলে গরিব-মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য রেল সফর কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলেই মত পর্যবেক্ষকদের। তা ছাড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন যত ঘন ঘন স্টেশনে দাঁড়ায়, এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্ষেত্রে তা হয় না। ফলে অনেক স্টেশনের গুরুত্ব কমতে পারে। সমস্যায় পড়তে পারেন রেলযাত্রীরা।

আরও পড়ুন: বিহারের ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার ছেলে লব

কবে থেকে আবার স্বাভাবিক রেল পরিষেবা শুরু হবে, সে বিষয়ে অবশ্য এখনও কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী রেল। বৃহস্পতিবার রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ওয়াই কে যাদব সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ এখনও দেশে রয়েছে। এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ (স্বাভাবিক রেল পরিষেবার) বলতে পারব না। যখন চালু হবে তখন এই নয়া বন্দোবস্ত কার্যকর হবে।’’

রেল পরিষেবায় সারা দেশেই প্রচুর লিঙ্ক এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে। এই পরিষেবায় একটি একপ্রেস ট্রেন তার যাত্রাপথে কয়েকটি কামরা টেনে নিয়ে নির্দিষ্ট স্টেশন পর্যন্ত যায়। তার পর ওই কামরাগুলি আলাদা করে রেখে ছুটে চলে শেষ গন্তব্যের উদ্দেশে। আলাদা করে রাখা কামরাগুলি আলাদা গন্তব্যে টেনে নিয়ে যায় অন্য ইঞ্জিন। ফেরার সময় আবার ওই কামরাগুলি জুড়ে নিয়ে যাত্রাশুরুর স্টেশনে ফিরে আসে এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এ রাজ্যে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বালুরঘাট লিঙ্ক এক্সপ্রেস। হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে উত্তরবঙ্গগামী এক্সপ্রেস ট্রেন বালুরঘাট লিঙ্ক এক্সপ্রেসের কয়েকটি কামরা মালদহ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। তার পর সেখান থেকে ওই কামরাগুলি যায় বালুরঘাট পর্যন্ত। এই লিঙ্ক এক্সপ্রেস ব্যবস্থা পুরোপুরি বিলুপ্ত হতে চলেছে নয়া ব্যবস্থায়। রেলের বক্তব্য, এই ধরনের লিঙ্ক এক্সপ্রেসের পরিবর্তে ওই সব লাইনে পুরো ট্রেন দিয়ে দেওয়া সুবিধাজনক। তাতে সময়ের অপচয় রোখা যাবে, এবং যাত্রীও বাড়বে।

নয়া সময়সূচিতে পরিবর্তন আসতে চলেছে ট্রেনের যাত্রাশুরু ও গন্তব্যে পৌঁছনোর সময়ের ক্ষেত্রেও। রেল সূত্রে খবর, বিশেষ করে গভীর রাতে অর্থাৎ অসময়ে ট্রেন ছাড়া বা গন্তব্যে পৌঁছনোর বিষয়টি এড়িয়ে চলা হবে। রেলের আধিকারিকদের মতে, এতে যাত্রীরা ট্রেন ধরার জন্য স্টেশনে পৌঁছতে বিপুল ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। একই অবস্থা হয় ট্রেন থেকে গভীর রাতে নেমে শহরের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতেও। যাত্রীদের এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই নয়া সময়সূচি এমন ভাবে তৈরি করা হবে, যাতে মধ্যরাতের পর থেকে ভোর পর্যন্ত সময় এড়িয়ে চলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন