বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর। —ফাইল চিত্র।
আবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল মণিপুরে। শনিবার বিকেলের পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অশান্ত হয়ে ওঠে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল! পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মণিপুরের বেশ কয়েকটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বিষ্ণুপুর জেলায় কার্ফু জারি করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবল, কাকচিঙের মতো জেলাগুলিতে জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাঁচ বা তার বেশি লোকের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মণিপুর পুলিশ-প্রশাসন।
মণিপুরের কমিশনার এবং স্বরাষ্ট্রসচিব পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবল, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলাগুলির বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আশঙ্কা করা হচ্ছে কিছু ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জনগণের আবেগকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। হিংসাত্মক বক্তব্য এবং ভিডিয়ো ছড়াতে সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করতে পারেন বলে মনে হচ্ছে, যা মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে!’’ আপাতত আগামী পাঁচ দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অশান্তির সূত্রপাত মেইতেই গোষ্ঠী আরামবাই টেংগোলের কমান্ডর-সহ পাঁচ জনের গ্রেফতারের খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই। মেইতেই গোষ্ঠীর বেশ কয়েক জন পশ্চিম ইম্ফলের কোয়াকেইথেল পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়। ধৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ। দুই পক্ষের ধস্তাধস্তিতে দুই সাংবাদিক-সহ তিন জন আহত হন। তার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন দিকে অশান্তির আগুন ছড়াতে শুরু করে। মাথায় পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার হুমকিও দিতে দেখা যায় কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে।
গত ৩ মে, ২০২৩ থেকে মণিপুরে হিংসার ঘটনা ঘটেছে বার বার। মেইতেই এবং কুকি জনজাতির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। গত দু’বছরে মণিপুরে গোষ্ঠীহিংসায় ২৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৫০,০০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এই আবহেই বীরেন সিংহ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। বর্তমানে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। তবে নতুন করে সরকার গড়তে চেয়ে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি। তবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তার মধ্যেই আবার অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুর।