Corona Vaccine

মোদীর টিকা নেওয়াতেও ভোটের অঙ্ক?

প্রথম দিনেই সকাল-সকাল এমসে গিয়ে প্রতিষেধক নেন ষাটোর্ধ্ব প্রধানমন্ত্রী। আজ একেবারে ভোর বেলাতেই এমসে চলে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি যে প্রতিষেধক নিতে যাবেন তা আগে থেকে জানানো হয়নি ট্রাফিক পুলিশকেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২১ ০৫:৫০
Share:

প্রতিষেধক নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই

গলায় অসমের গামছা। প্রতিষেধক দিলেন যে দুই নার্স—পুদুচেরি ও কেরলের।

Advertisement

আপাতদৃষ্টিতে তথ্যগুলির মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক নেই। কিন্তু সময়টি যদি ভোটের মরসুম হয়, অসমের গামছা গলায় জড়ানো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিল্লির এমস হাসপাতালে কেরল ও পুদুচেরির নার্সদের টিকা দেওয়ায় ভোট-রাজনীতিই খুঁজে পাচ্ছেন বিরোধীরা। কারণ যে চারটি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে গত সপ্তাহে নির্বাচন ঘোষিত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কেরল, অসম ও পুদুচেরি।

আজ থেকে গোটা দেশে ষাটোর্ধ্ব এবং ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী কিন্তু বিভিন্ন গুরুতর রোগের শিকার এমন ২৭ কোটি ব্যক্তির টিকাকরণ শুরু হল। প্রথম দিনেই সকাল-সকাল এমসে গিয়ে প্রতিষেধক নেন ষাটোর্ধ্ব প্রধানমন্ত্রী। আজ একেবারে ভোর বেলাতেই এমসে চলে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি যে প্রতিষেধক নিতে যাবেন তা আগে থেকে জানানো হয়নি ট্রাফিক পুলিশকেও। ফলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে এমস, এই দশ মিনিটের রাস্তায় ছিল না কোনও বিশেষ বিধিনিষেধ। কেন্দ্রীয় সূত্রে বলা হয়েছে, ভিড় এড়াতে এবং হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্ম যাতে ব্যাহত না হয়, সে জন্যই ভোরেবেলায় টিকা নিতে যান মোদী। তিনি যে এমসে আজ সকালে যাবেন তা গত কাল গভীর রাতে খুব অল্প সংখ্যক লোককেই জানানো হয়েছিল। এমসের মিডিয়া কোর্ডিনেটর বিশ্বনাথ আচারিয়া জানান, “আজ সকালেই নার্সদের প্রধানমন্ত্রীকে টিকা দেওয়ার কথা জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ নিউ ওপিডি সেন্টারের অষ্টম তলায় এসে টিকা নেন। তার পরে নিয়ম মেনে আধ ঘণ্টা বসে বাড়ি যান।

Advertisement

এত দিন প্রশ্ন ছিল ১৬ জানুয়ারি টিকাকরণ শুরু হয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেন তা নিচ্ছেন না ? বিশেষ করে যেখানে প্রতিষেধক নেওয়া নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের মধ্যে দ্বিধা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী সর্বাগ্রে টিকা নিলে জনমানসে ইতিবাচক বার্তা যেত। আজ সেই বিতর্ক শেষ হল। কোভ্যাক্সিন নিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন ওই প্রতিষেধক সম্পূর্ণ নিরাপদ। তাদের সংস্থার উপরে ভরসা করে কোভ্যাক্সিন নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারত বায়োটেক-এর প্রধান কৃষ্ণ ইলা। গোটা পর্বে অবশ্য ভোট রাজনীতির গন্ধ পেয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর কথায়, গামছা অসমের। দুই নার্স পুদুচেরি ও কেরলের। ঘটনাচক্রে ওই তিন রাজ্যেই ভোট। এ আসলে ভোটমুখী রাজ্যগুলিকে বার্তা পৌঁছানোর প্রচেষ্টা।” এক বিরোধী নেতার কটাক্ষ, “গীতাঞ্জলিটাও হাতে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর। তা হলে পশ্চিমবঙ্গ বাদ পড়ত না।”

আজ প্রধানমন্ত্রীকে টিকা দেন পি নিভেদা। সঙ্গে ছিলেন কেরলের নার্স রোসাম্মা অনিল। প্রতিষেধক নেওয়ার সময়ে নার্সদের সঙ্গে রসিকতাও করেন প্রধানমন্ত্রী। জানতে চান, তাঁকে কি পশুদের সূচে ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে? তার পর নিজেই মজা করে বলেন, “আসলে রাজনীতিকদের চামড়া মোটা বলেই সবাই জানে তো! তাই আপনারা মোটা সূচ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন কি না জানতে চাইলাম।” এমস সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে হেসে ফেলেন দুই নার্স। আজ পি নিভেদার কাছ থেকে কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজটি নিলেন প্রধানমন্ত্রী। আবার ২৮ দিন পরে তাঁকে দ্বিতীয় ডোজটি নিতে হবে। আজ প্রতিষেধক নেওয়ার পরে মোদী টুইট করে বলেন, ‘যে ভাবে আমাদের চিকিৎসক ও গবেষকেরা এত অল্প সময়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তা প্রশংসনীয়। আসুন সকলে মিলে দেশকে করোনা মুক্ত করি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন