Crime

‘কোথায় যাব, কী করব, সেটা আমার ভাবার বিষয়’

তরুণীর প্রশ্ন, ‘‘ওই রাতে যেটা ঘটেছিল সেটা কি আমার দোষ? কেন পুরুষরা রাতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না? কেন আমাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে? আমি তো আক্রান্ত হয়েছিলাম... কেন আক্রমণকারীদের প্রশ্ন করা হচ্ছে না?’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ১৬:০৭
Share:

বর্ণিকা কুণ্ডু। ছবি: সংগৃহীত।

ফেসবুকে সে রাতের ঘটনা লেখার পরই মেয়েটির চরিত্রহননে নেমে পড়েছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। দলীয় নেতার ছেলের কুকর্ম ঢাকতে বর্ণিকার জীবনযাত্রা নিয়েই প্রশ্ন তুলছিলেন তাঁরা। এ বার সেই সব সমালোচনার জবাব দিলেন চণ্ডীগড়ের তরুণী। বললেন, ‘‘আমি কী করব সেটা অন্যের দেখার কথা নয়। আমি কোথায় যাব, কী করব, সেটা আমার বা পরিবারের ভাবার বিষয়। অন্য কারও নয়।’’

Advertisement

এনডিটিভি-কে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ২৯ বছরের তরুণীর প্রশ্ন, ‘‘ওই রাতে যেটা ঘটেছিল সেটা কি আমার দোষ? কেন পুরুষরা রাতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না? কেন আমাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে? আমি তো আক্রান্ত হয়েছিলাম... কেন আক্রমণকারীদের প্রশ্ন করা হচ্ছে না?’’ এর পরেই ওই তরুণীর সংযোজন, ‘‘রাত ১২টা, দু’টো বা ভোর চারটে কখন বাইরে যাব, সেটা ঠিক করব আমি বা আমার পরিবার।’’

আরও পড়ুন:আনাই হলো না অপহরণের অভিযোগ

Advertisement

আরও পড়ুন: সেই রাতে ধর্ষিতা বা খুন হইনি, ভাগ্য ভাল

এ দিকে, ঘটনার রাতে বর্ণিকার গাড়ির পিছু নিয়ে যে রাস্তা দিয়ে বিজেপি-র সভাপতি সুভাষ বরালার ছেলে বিকাশের গাড়ি ধাওয়া করেছিল, সেই রাস্তার পাঁচটি সিসিটিভি ফুটেজের খোঁজ মিলল। প্রথমে ওই রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ নিখোঁজ বলে অভিযোগ উঠেছিল। যা শুনে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বর্ণিকার বাবা তথা হরিয়ানার অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বীরেন্দ্র কুণ্ডু। বিষয়টি তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও জানিয়েছিলেন। এ দিন চণ্ডীগড়ের সিনিয়র পুলিশ অফিসার সতীশ কুমার এনডিটিভিকে জানান, সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তাতে ধরাও পড়েছে বর্ণিকার গাড়ি ধাওয়া করার ছবি। যদিও, ফুটেজের ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ডিজিপি তেজেন্দ্র সিংহ। পাশাপাশি, প্রথমে সিসিটিভি ফুটেজ না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

সেই ফুটেজ

অন্য দিকে, চণ্ডীগড়ের এই ঘটনায় সরব হলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সহবাগ। টুইটারে ঘটনার নিন্দা করে তদন্তের দাবিও তুলেছেন তিনি।

নিন্দা টুইট সহবাগের

ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। সে দিন রাত সওয়া ১২টা নাগাদ চণ্ডীগড়ের সেক্টর ৮ মার্কেট থেকে গাড়ি চালিয়ে ফেরার পথে তরুণী বর্ণিকা কুণ্ডু লক্ষ্য করেন, তাঁকে ফলো করছে একটি এসইউভি। এক সময়ে ওভারটেক করে পথ আটকায় সেটি। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন হরিয়ানা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুভাষ বারালার ছেলে বিকাশ। সঙ্গে ছিলেন তার বন্ধু আশিস কুমার। গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে আসে আশিস। তখনই দ্রুত নিজের গাড়ি ঘুরিয়ে পালাতে পালাতেই পুলিশের ১০০ নম্বর ডায়াল করে গোটা ঘটনার কথা জানান তরুণী। কোন দিকে যাচ্ছেন, জানিয়ে দেন তা-ও।

আরও পড়ুন:বর্ণিকার পাশে বাবা, বললেন মাথা নত করবো না

পিছু-ধাওয়া চলে আরও পাঁচ-ছ’কিলোমিটার। একটা সিগন্যালে থামতেই ফের নেমে এসে তরুণীর গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা করে আশিস। তখনই এসে পড়ে পুলিশের গাড়ি। হাতেনাতে পাকড়াও। কিন্তু, গ্রেফতারির কিছু ক্ষণের মধ্যেই জামিনে মুক্তি পান তাঁরা। এর পরই ওঠে প্রভাবশালী তত্ত্ব। সেই ঘটনা পরে ফেসবুকে লেখেন ওই তরুণী। তার পরেই শুরু বিতর্কের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন