কে কবিতা। — ফাইল চিত্র।
দলবিরোধী কাজের অভিযোগে কন্যা কে কবিতাকে দল থেকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করলেন ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও (যিনি কেসিআর নামেই রাজনৈতিক মহলে সমধিক পরিচিত)। মঙ্গলবার তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর জানান, কবিতার সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য এবং কার্যকলাপ দলের নীতি এবং আদর্শের পরিপন্থী। তাই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কবিতাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেসিআর।
কবিতা তেলঙ্গানার বিধান পরিষদের সদস্য। কয়েক দিন আগেই বিআরএস নেতা টি হরিশ রাও এবং প্রাক্তন সাংসদ মেঘা কৃষ্ণা রেড্ডির বিরুদ্ধে কেসিআর-এর ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। গত ২২ অগস্ট কবিতার অনুপস্থিতিতেই তাঁকে দলের অন্যতম শ্রমিক সংগঠন টিবিজিকেএস-এর সাম্মানিক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় কবিতা অভিযোগ করেছিলেন, দলেরই কেউ কেউ তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছেন। দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্যই তাঁকে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে দাবি করেন কেসিআর-কন্যা।
গত মে মাসে ভাই তথা কেসিআর-পুত্র কে টি রাম রাও (কেটিআর)-এর নাম না-করেই তাঁকে নিশানা করেছিলেন কবিতা। অভিযোগ করেছিলেন, বিআরএস-কে বিজেপির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি দলের একাংশের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে বাবা তথা বিআরএস প্রধান চন্দ্রশেখরকে চিঠি লেখেন কবিতা। কিন্তু সেই চিঠি প্রকাশ্যে চলে আসে। এই ঘটনার নেপথ্যেও ষড়যন্ত্র আছে বলে দাবি করেছিলেন কবিতা। তিনি বলেছিলেন, “চিঠি লেখা কি অপরাধ? আমি জানতে চাই, কে বা কারা এই চিঠি প্রকাশ্যে নিয়ে এল?”
দিল্লির মদের লাইসেন্স বিলি সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে বেশ কয়েক মাস জেলে ছিলেন কবিতা। তার পরেও অবশ্য রাজনৈতিক মূলস্রোতে ফিরে আসেন। কেসিআর-এর পর দলের নেতৃত্বভার তাঁর কাছেই যেতে চলেছে বলে মনে করছিলেন অনেকে। তবে আপাতত সেই সম্ভাবনায় জল ঢাললেন কেসিআর নিজেই। একদা তেলঙ্গানা আন্দোলনে ভর করে দক্ষিণের এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসা বিআরএস এমনিতেই এখন বেশ নড়বড়ে। তেলঙ্গানায় কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর দলের বহু নেতা-কর্মী হাত শিবিরে ভিড়েছেন। দলকে আবার চাঙ্গা করার চেষ্টায় বিআরএস নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে কবিতাকে সাসপেন্ড করার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।