National News

সিন্ধিয়ার চালে কমল কাঁটায়! মধ্যপ্রদেশে ডামাডোল

গরিষ্ঠতার চেয়ে মাত্র চার জন বিধায়ক বেশি ছিল কমলের হাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২০ ০৪:১৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

হোলির আগে ডামাডোল মধ্যপ্রদেশে। ‘হক’ বুঝে নিতে মাঠে নেমেছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। রাজ্যের ১৭ বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। এঁদের মধ্যে পাঁচ জন মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ দিল্লিতে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করে এসে আজ রাতেই ভোপালে বাকি মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রীরা কমল নাথের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাঁর হাতে ইস্তফার চিঠি তুলে দিয়েছেন। সরকার বাঁচাতে মরিয়া কমল বৈঠকে বলেন, ‘‘মাফিয়াদের সাহায্য নিয়ে অনৈতিক পথে সরকারকে অস্থির করতে দেব না।’’ কংগ্রেসে কেউ কেউ একে নবীন-প্রবীণে সংঘাত বলে মনে করছেন।

Advertisement

গরিষ্ঠতার চেয়ে মাত্র চার জন বিধায়ক বেশি ছিল কমলের হাতে। সিন্ধিয়ার হাত ধরে ১৭ জন বিধায়ক শিবির ছাড়লে কমলের পক্ষে সরকার টেকানো সম্ভব হবে না, সেটা স্পষ্ট। এই অবস্থায় এ দিন রাতে রাহুল গাঁধী যান ১০ জনপথে। কথা বলেন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে। অন্য দিকে বিজেপির অমিত শাহ নিজের বাড়িতে ডেকে নেন শিবরাজ সিংহ চৌহানদের। পাঁচ দিনের ছুটিতে রাজ্যপাল লালজি টন্ডন লখনউ গিয়েছেন। ছুটি ছেঁটে কালই ফিরে যাচ্ছেন ভোপালে।

কাল হোলির দিনে কী হবে? সেটা নির্ভর করছে জ্যোতিরাদিত্য কী করেন, তার উপরে? তাঁর বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে জল্পনা চলছে অনেক দিন ধরেই। কাল তাঁর বাবা মাধবরাও সিন্ধিয়ার জন্মদিন। জোর জল্পনা চলছে, কংগ্রেসে প্রাপ্য মর্যাদা ও গুরুত্ব না-পেয়ে নতুন দল গড়তে পারেন সে দিন। সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশে কমল-দিগ্বিজয় সাঁড়াশি চাপ বাড়ছে দেখে গত কালই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন তিনি। সাড়া পাননি। তাতেই যা বোঝার বুঝে নেন। জ্যোতিরাদিত্য আজ ফের পৌঁছে যান দিল্লিতে। ঠিক তার আগেই খবর ছড়ায়, ভোপাল থেকে ৫ মন্ত্রী-সহ কংগ্রেসের ১৭ জন বিধায়ক ‘উধাও’। একটি সূত্রে দাবি করা হয়, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে জ্যোতিরাদিত্যই তাঁদের বেঙ্গালুরুতে পাঠিয়ে দর কষাকষিতে নেমেছেন। দিল্লিতে তিনি এ দিন সচিন পাইলটের সঙ্গে কথা বলেন। পরে গাঁধী পরিবারের কারও সঙ্গে তাঁর কথা বা যোগাযোগ হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এর মধ্যে কমল নাথের তরফে তাঁকে বার্তা দেওয়া হয়, ‘‘সব শর্ত মেনে নেওয়া হবে। কথা বলুন।’’ রাত ১২টা ১৪ মিনিটে সচিন পাইলট টুইট করেন, ‘‘আশা করছি মধ্যপ্রদেশের সঙ্কট শীঘ্রই কাটবে। নেতারা নিজেদের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে এই মুহূর্তে রাজ্যে স্থিতিশীল সরকার দরকার।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীকে তিক্ত-সফর থেকে বাঁচাল করোনা

সূত্রের খবর, দলীয় বিধায়কদের কাল ভোপালে জরুরি বৈঠকে ডেকেছে বিজেপি। গত সপ্তাহে ভোপাল থেকে গুরুগ্রামের রিসর্টে পৌঁছে গিয়েছিলেন কংগ্রেস, বিএসপি, এসপি এবং নির্দল মিলিয়ে শাসক শিবিরের ১০ জন বিধায়ক। কংগ্রেস বিজেপির ‘অপারেশন কমল’-এর দিকে আঙুল তুললেও, কংগ্রেসেরই অন্দর থেকে একটা অংশ বলেছিল— সবের মূলে দিগ্বিজয়ই। কারণ, তিনি ফের রাজ্যসভায় যেতে চান। এবং সিন্ধিয়াকে যে ভাবেই হোক আটকাতে চান। কেউ কেউ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকেও রাজ্যসভায় পাঠাতে চান এই রাজ্য থেকে। সেটিও তাঁর পছন্দ নয়। তাই সঙ্কট তৈরি করে নিজেই ‘সঙ্কটমোচক’ হতে চাইছেন। আজ সিন্ধিয়া মাঠে নামায়, সরকার বাঁচাতে তৎপর হন দিগ্বিজয়ও।

উধাও ১৭ কংগ্রেস বিধায়ক কোথায়? সূত্রের খবর, বেঙ্গালুরুর কাছে এক রিসর্টে তাঁদের রাখা হয়েছে। দেখভালের দায়িত্বে বিজেপির স্থানীয় বিধায়ক। গত ৩ মার্চ ঠিক এ ভাবেই ১০ বিধায়কের ‘উধাও’ হওয়া নিয়ে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। পরে কমল বলেন, ‘‘ওঁরা তীর্থযাত্রায় বেরিয়েছিলেন। ফিরে এসেছেন।’’

এ যাত্রায় কী হবে? সূত্রের খবর, বিজেপি জ্যোতিরাদিত্যকে রাজ্যসভার আসন ও কেন্দ্রে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছে। আর কংগ্রেস তাঁকে রাজ্য সভাপতি কিংবা রাজ্যসভার পদ দিতে রাজি, যা ছিল তাঁর দাবি। কী করবেন সিন্ধিয়া? বল তাঁর কোর্টে। নতুন দল গড়লে অনুগামীদের বিধায়ক পদও ছাড়তে হবে। সব বিধায়ক রাজি নন। বিধায়কদের ফেরানোর ক্ষেত্রে কমল নাথের ভরসা সেটাই। মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে সেই বার্তা দিলেন কমল নাথ।

বাজি ধরেছে দু’পক্ষই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন