দুই কন্যাকে নিয়ে রাশিয়ান মহিলা নিনা কুটিনা। —ফাইল চিত্র।
কর্নাটকের গোকর্ণে গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া রাশিয়ান মহিলা এবং তাঁর দুই মেয়েকে এখনও দেশ থেকে বিতাড়িত করা যাবে না। ওই পরিবারের ‘ডিপোর্টেশন’ (দেশ থেকে বিতাড়ন) প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কর্নাটক হাই কোর্ট। রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু অধিকার সনদ অনুসারে বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে আদালত।
গত ৯ জুলাই গোকর্ণে জনবসতি থেকে অনেক দূরে এক পরিত্যক্ত গুহায় থেকে ৪০ বছর বয়সি রুশ মহিলা নিনা কুটিনা এবং তাঁর দুই মেয়েকে উদ্ধার করে পুলিশ। বড় মেয়ের বয়স ৬ বছর এবং ছোট মেয়ের বয়স ৪ বছর। গত ১২ জুলাই এই তথ্য প্রকাশ্যে আসে। এরই মধ্যে কুটিনাদের ভারত থেকে বিতাড়ন আটকাতে মামলা হয় হাই কোর্টে। মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি, শিশুদের অধিকার সংক্রান্ত রাষ্ট্রপু়ঞ্জের সনদ উপেক্ষা করে এবং ওই শিশুদের কথা না ভেবেই বিতাড়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মামলাটির আরও বিশদ শুনানির প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে আদালত। কেন্দ্রের তরফে সহকারী সলিসিটর জেনারেল জানান, ওই দুই শিশুর ভারতে ভ্রমণের কোনও বৈধ নথি নেই। তবে আদালত মনে করছে, এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যাতে এখনই বিতাড়ন করতে হবে।
কেন্দ্রের কী বক্তব্য, তা লিখিত ভাবে দু’সপ্তাহের মধ্যে আদালতে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি এস সুনীল দত্ত যাদব। আদালতকে না জানিয়ে ওই পরিবারের বিতাড়ন সংক্রান্ত কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। আগামী ১৮ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে নিনা জানিয়েছেন, মূলত আধ্যাত্মিক কারণেই শহর থেকে দূরে নিরিবিলি কোনও জায়গায় থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। তদন্তে দেখা গিয়েছে, ২০১৬ সালে বিজ়নেস ভিসায় ভারতে এসেছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে ওই ভিসায় মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালে আবার নেপাল হয় এ দেশে আসেন। তখন থেকে একাধিক বার ভিসাবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে ওই মহিলার বিরুদ্ধে। জঙ্গলের গুহা থেকে ওই পরিবারকে উদ্ধারের সময় কুটিনার পাসপোর্টও উদ্ধার করে পুলিশ। ওই পরিবারকে উদ্ধারের পরে প্রাথমিক ভাবে রাখা হয়েছিল স্থানীয় একটি আশ্রমে। পরে মহিলাদের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয় তাঁদের। আপাতত ওই মহিলা এবং তাঁর দুই মেয়ে সেখানেই।