National news

ভিক্ষা করে পেট চালিয়েছেন এক দিন, আজ তাঁরই ৩৮ কোটির টাকার ব্যবসা!

রেনুকা আরাধ্য। আজ যদি তাঁর দিকে দেখেন, বিশ্বাস করতেই পারবেন না, এক সময় ভিক্ষা করে দিন কাটিয়েছেন তিনি। হায়দরাবাদ, চেন্নাইয়ের ট্যাক্সি পরিষেবা বললে সবার প্রথমে তাঁর সংস্থার কথাই সবাই বলে উঠবেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ১০:৫৭
Share:
০১ ১৪

রেনুকা আরাধ্য। আজ যদি তাঁর দিকে দেখেন, বিশ্বাস করতেই পারবেন না, এক সময় ভিক্ষা করে দিন কাটিয়েছেন তিনি। হায়দরাবাদ, চেন্নাইয়ের ট্যাক্সি পরিষেবা বললে সবার প্রথমে তাঁর সংস্থার কথাই সবাই বলে উঠবেন।

০২ ১৪

বেঙ্গালুরুর আনেকাল তালুকের মাঝে একটা ছোট গ্রাম গোপাসান্দ্রা। এই গ্রামেই জন্ম রেনুকার। বাবা পুরোহিত ছিলেন। কিন্তু রোজ কাজ পেতেন না। পাঁচ জনের সংসারে খাবার জোটাতে তাই বাবার সঙ্গে ভিক্ষাও করেছেন তিনি। আজ তাঁরই বছরে ব্যবসায় টার্নওভার ৩৮ কোটি টাকা!

Advertisement
০৩ ১৪

ভিক্ষুক থেকে সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার জার্নিটা কিন্তু সহজ ছিল না আরাধ্যর। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট আরাধ্য। দাদা আর দিদিকে পড়াশোনার জন্য বেঙ্গালুরু পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু আরাধ্য বাবা-মার সঙ্গেই থাকতেন।

০৪ ১৪

গোপাসান্দ্রারই একটি স্কুলে পড়তেন তিনি। তবে বাবার কাজে হাত লাগানোর জন্য বেশির ভাগ দিনই স্কুলে যেতে পারতেন না। দরিদ্রদের বিনা পয়সায় চাল, রাগি, জোয়ার বিলি করা হত যেখানে, খবর পেলেই বাবার সঙ্গে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতেন তিনিও। সেই সামগ্রী নিয়ে বাজারে বিক্রি করে খাবার কিনতেন পরিবারের জন্য।

০৫ ১৪

১২ বছর বয়সে আরাধ্যকে তাঁর বাবা একটি বাড়িতে পরিচারকের কাজে পাঠান। সেখানে গবাদি পশুর দেখাশোনা থেকে বাড়ির যাবতীয় কাজ তাঁকে করতে হত।

০৬ ১৪

তবে পড়াশোনার প্রতি তাঁর ঝোঁকও ছিল। সমস্ত কাজের ফাঁকে টুকটাক পড়াশোনা চালিয়ে যেতেন তিনি। আরাধ্য নিজের উপার্জনেই চিকপেটের একটি স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু তার তিন বছর পরই বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে গ্রামে ফিরে আসেন।

০৭ ১৪

তারপর আর পড়াশোনার সুযোগ পাননি। মা এবং দিদির সমস্ত দায়িত্ব তাঁর কাঁধে এসে পড়ে। কারণ তাঁর বিবাহিত দাদা মা-বোনের দায়িত্ব নিয়ে অস্বীকার করেন।

০৮ ১৪

সংসার চালাতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে লেদ কারখানায় কাজ শুরু করেন। তারপর একটা প্লাস্টিক কারখানায় যোগ দেন। কিন্তু সেই উপার্জনও যথেষ্ট ছিল না পরিবারের জন্য। তাই একই সঙ্গে রাতে নিরাপক্ষারক্ষীর কাজও করেছেন।

০৯ ১৪

এরপর একটা ছাপাখানায় ঝাড়ুদারের কাজ পান আরাধ্য। ছাপাখানার মালিক তাঁর সততায় এতটাই খুশি হন যে, তাঁকে কম্পিউটারের বেসিক কাজ শিখিয়ে ছাপাখানায় কাজ দিয়ে দেন। টানা এক বছর তিনি সেখানেই ছিলেন। তারপর তিনি একটি সংস্থার সেলস ম্যান হন।

১০ ১৪

২০ বছর বয়সে তাঁর পুষ্পা নামে এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁকেই বিয়ে করেন আরাধ্য। এরপর কখনও কাপড়ের দোকান, কখনও মালির কাজ করে সংসার চালিয়েছেন। গাছ বেয়ে উঠে নারকেল পেরেও সংসার চালিয়েছেন। সেই সময় তাঁর মাসে আয় ছিল মাত্র ৬০০ টাকা।

১১ ১৪

সেই সময়ে সতীশ রেড্ডি নামে এক গাড়ি চালকের সঙ্গে পরিচয়ই তাঁর ভাগ্য বদলে দেয়। সতীশের কাছ থেকে গাড়ি চালানো শেখেন আরাধ্য। চার বছর মৃতদেহ বহনকারী গাড়ির চালক হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। তারপর ঠিক করেন, ঋণ নিয়ে নিজের ট্রাভেল এজেন্সি খোলার।

১২ ১৪

২০০৬ সালে দেড় লক্ষ টাকার ঋণের বিনিময়ে জীবনের প্রথম গাড়িটা কিনে ফেললেন আরাধ্য। প্রথমে নিজেই গাড়ি চালাতেন। ব্যবসায় লাভ থেকে ক্রমে আরও ৬টা গাড়ি কেনেন। ১২ ঘণ্টা করে দু’টো শিফটের জন্য ১২ জন চালকও রাখেন।

১৩ ১৪

ক্রমে তাঁর ব্যবসা এতটাই বড় হয়ে যায় যে, এখন তিনি ৮০০ গাড়ির মালিক। দিনরাত হায়দরাবাদ এবং চেন্নাইয়ের যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে তাঁর সংস্থার গাড়ি। এখন বছরে টার্নওভার ৩৮ কোটি টাকা। আরাধ্যর লক্ষ্য এই টার্নওভার ১০০ কোটি করার।

১৪ ১৪

তাঁর কোম্পানির নাম ‘প্রবাসী ক্যাব’। উন্নতির এই জার্নিটায় আরাধ্য একটাই মন্ত্র জপ করে গিয়েছেন, ‘‘বড় স্বপ্ন দেখুন, ঝুঁকি নিন। জীবনের সব পথেই সৎ থাকুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement