মণিপুরের রাস্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরের রাস্তা অবাধ যাতায়াতের জন্য খুলে দিতে রাজি হল কুকি জনগোষ্ঠী। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি রয়েছে। এরই মধ্যে গত ৮ মার্চ থেকে উত্তর পূর্বের অশান্তি কবলিত এই রাজ্যে রাস্তাঘাট সচল করতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। কিন্তু কুকি গোষ্ঠী বিক্ষোভের জেরে রাস্তাঘাট ‘সচল’ করার উদ্যোগে প্রথম দিনেই ধাক্কা খায় প্রশাসন। জায়গায় জায়গায় চলে বিক্ষোভ, অবরোধ।
এই আবহে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর জন্য দফায় দফায় কুকি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে প্রশাসনের। বৃহস্পতিবারও নয়াদিল্লিতে কুকি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রের। ওই বৈঠকের পরে সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসতে রাজি হয়েছে কুকি গোষ্ঠী। ওই সমঝোতা অনুসারে, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক সাধারণ মানুষ এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহণে কোনও বাধা দেবে না কুকি গোষ্ঠী। চলতি মাসেই মণিপুরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ২০২৩ সালে অশান্তি ছড়ানোর পর থেক এটিই তাঁর প্রথম মণিপুর সফর হতে চলেছে। এ অবস্থায় কেন্দ্র এবং কুকি গোষ্ঠীর আলোচনায় রাস্তা সচল রাখার সমঝোতা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবাধ যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুকি-জো কাউন্সিল। এটি গত কয়েক দিন ধরে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং কুকি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের ধারাবাহিক বৈঠকের ফল বলে মনে করছে কেন্দ্র। মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, জাতীয় সড়কে শান্তি বজায় রাখতে সেখানে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছে কুকি গোষ্ঠী।
গত প্রায় দু’বছর ধরে তপ্ত রয়েছে মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সে রাজ্যের পরিস্থিতি। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর আবার মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বহু বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মণিপুরে জারি হয় রাষ্ট্রপতির শাসন।