Dileep Sahni

মুখ ফিরিয়েছিল ব্যাঙ্ক, দরিদ্র শ্রমিকের ছেলে পেল বার্ষিক আট লাখের চাকরি

দরিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বিহারের পূর্ণিয়া জেলার হারদার দিলীপ সাহনি শুধু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেননি, বার্ষিক আট লাখ টাকার চাকরি পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পটনা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ১৪:৫৫
Share:

দিলীপ সাহনি। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।

বাবা শ্রমিক। শারীরিক কারণে মা তেমন কাজ করতে পারেন না। কোনও মাসে আয় দু’হাজার, কখনও আবার টেনেটুনে হাজার তিনেক। ছেলের উচ্চ শিক্ষার জন্য দরকার ছিল টাকার। কিন্তু, পারিবারিক আয় অতি সামান্য। ফলে ঋণের জন্য হন্যে হয়ে ব্যাঙ্কের দরজায় দরজায় ঘুরলেও ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে।

Advertisement

কিন্তু, তাতে কী? ছেলের স্বপ্নকে বাস্তব করতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালায় গোটা পরিবার। দরিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বিহারের পূর্ণিয়া জেলার হারদার দিলীপ সাহনি শুধু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেননি, বার্ষিক আট লাখ টাকার চাকরি পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।

গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলোর জন্য কাজ করবেন। সেই স্বপ্নে জাল বুনেই এগিয়ে চলা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকার অভাবে কোনও দিনই গৃহশিক্ষক রাখার কথা ভাবতে পারেননি দিলীপ। ভরসা রেখেছিলেন স্কুল শিক্ষকদের উপর। তখন নওদার জেএনজেভি স্কুলের ছাত্র দিলীপ। ২০১১ সালে ওই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। এর পর ভর্তি হন দ্বারভাঙার বাহেরা কলেজে। ২০১৩ সালে সেখান থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: মোবাইলে আধার লিঙ্ক কেন জরুরি? কেন্দ্রকে জানাতে বলল সুপ্রিম কোর্ট

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন দেখলেও, বাধা হয়ে ওঠে আর্থিক সংগতি। মুখ ফিরিয়ে নেয় ব্যাঙ্কগুলিও। হাল ছাড়েনি সাহনি পরিবার। দাদার লেখাপড়া চালানোর জন্য এক বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতে শুরু করেন ভাই বিজয়। হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এর সাক্ষাৎকারে দিলীপ বলেন, ‘‘শুধু আমার জন্যই নিজের পড়া বন্ধ করে চাকরি করতে শুরু ভাই। আর বাবা পটনা ছেড়ে চলে যান নেপালে। সেখানে রাস্তায় রাস্তায় আইসক্রিম বিক্রি করতে শুরু করেন।’’

২০১৩ সালেই ভোপালের এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন দিলীপ। সেখান থেকেই ২০১৬ সালে শীর্ষস্থান পেয়ে পাশ করেন তিনি। সেরার স্বীকৃতি হিসাবে মধ্য প্রদেশ সরকার পুরস্কৃত করে তাঁকে।

আরও পড়ুন: ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার এই ইন্ডিয়ান আইডল প্রতিযোগী

আর অবশেষে গত মাসেই যেন স্বপ্ন স্বার্থক হয় দিলীপের। ইস্পাত সংস্থা সঙ্গম গ্রুপের তরফে সিঙ্গাপুরে বার্ষিক আট লাখ টাকার চাকরির অফার করা হয় তাঁকে। শীঘ্রই চাকরিতে যোগ দেবেন তিনি। দিলীপের কথায়, ‘‘বাবা-ভাইয়ের সাহায্য ছাড়া আমি কোনও দিনই ইঞ্জিনিয়ার হতে পারতাম না।’’ এখন শুধু স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে বদ্ধপরিকর তিনি। বললেন, ‘‘অর্থের অভাবে যারা লেখাপড়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই। গ্রামের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।’’ আর চান, ভাই আবার লেখাপড়াটা শুরু করুক।

আরও পড়ুন: ১০০ বছর বয়সেও ভোট দিতে যাবেন স্বাধীন ভারতের এই প্রথম ভোটার!

বাবা লালতনু সাহনি বলছেন, ‘‘এ বার আমাদের পরিবারের মুখে হাসি ফুটবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন