ফারুক আহমেদ তাড়ওয়া। ছবি: সংগৃহীত।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় নাম জড়িয়েছে লশকর জঙ্গি ফারুক আহমেদ তাড়ওয়ার। তদন্তকারীদের দাবি, সে বর্তমানে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে রয়েছে। তদন্তে তার নাম উঠে আসার পরেই উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারায় তার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই লশকর জঙ্গির শাস্তি চাইছেন তার ভাইপো জ়াকির। তিনি বলেন, ‘‘উনি যদি হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকেন, তা হলে ওঁর শাস্তি হওয়া উচিত। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে হত্যা করা উচিত ওঁকে। ভারত সরকার যদি সন্ত্রাসবাদকে খতম করতে চায় তো পাকিস্তানকেও ধ্বংস করে দেওয়া উচিত।’’
ফারুকের ভাইপো জ়াকির জানান, ১৯৯০ সালে তাঁর কাকা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চলে গিয়েছিল। তার পর থেকে সেখানেই থাকে সে। জ়াকির বলেন, ‘‘আমি জন্মেছি ২০০০ সালে। আমার কাকা যুক্ত থাকলে ওঁকে সাজা দেওয়া হোক। আমাদের নিশানা করা ঠিক নয়। আমরা এ দেশকেই ভালবাসি। আমরা শ্রমিক, সেনাকেও আমরা সাহায্য করি।’’
হামলার ঘটনার তদন্তে সন্দেহের তালিকায় আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ রয়েছেন। তার মধ্যে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন ১৮৬ জন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে কয়েক জন ‘ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার’। তাঁরা মূলত স্থানীয় মানুষ। তাঁদের কাজ জঙ্গিদের নানা ভাবে সাহায্য করা। তদন্তকারীদের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০ জন ‘ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার’কে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার। ফারুকই কয়েক জন ‘ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার’-এর খোঁজ দিয়েছিল জঙ্গিদের। শুধু তা-ই নয়, পহেলগাঁও কাণ্ডে যুক্ত দুই পাকিস্তানি জঙ্গিকে ভারতে অনুপ্রবেশেও সাহায্য করেছিল সে।
হামলার তদন্তে ৪৫ জনের একটি বিশেষ দল তৈরি করেছে এনআইএ। সেই দলে রয়েছেন আইজি, ডিআইজি ও এসপি। এই বিশেষ দলের কাজ হল বৈসরনে প্রবেশের রাস্তা থেকে শুরু করে পুরো এলাকাটির একটি ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নথিভুক্ত করা। এর সঙ্গে থাকবে ফরেন্সিক পরীক্ষাও। এগুলির সাহায্যে হামলার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযোগ দাঁড় করানোর পরিকল্পনা রয়েছে তদন্তকারীদের। ইতিমধ্যেই পর্যটকের ভিডিয়োয় যে জ়িপলাইন অপারেটরকে ধর্মীয় ধ্বনি দিতে দেখা গিয়েছে, সেই মুজ়ামিল আহমেদ কুমহারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যদিও তাঁর পরিবারের দাবি, ওটি স্রেফ আতঙ্কের অভিব্যক্তি ছিল। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমের দাবি, মুজ়ামিল যে আতঙ্কগ্রস্ত হয়েই ধর্মীয় ধ্বনি দিয়েছিলেন, তা মানছেন তদন্তকারীদের একাংশও।