রোশন বেগ।
বুথফেরত সমীক্ষায় রাজ্যে বিজেপির জয়ের ইঙ্গিত মিলতেই কর্নাটক কংগ্রেসের অন্দরের অশান্তি প্রকাশ্যে এসেছে। দলীয় নেতৃত্বকে নিশানা করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক রোশন বেগ। কর্নাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপালকে ‘ভাঁড়’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
এই প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়কের মন্তব্যে পরই রাজ্যে কংগ্রেস-জেডিএস সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। দুই দলের অনেক নেতা ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করছেন, লোকসভা নির্বাচনে কর্নাটকে বিজেপি ভাল ফল করলে জোট সরকারের স্থায়িত্ব প্রশ্নের মুখে পড়তে বাধ্য।
বুথফেরত সমীক্ষাগুলির ইঙ্গিত, কর্নাটকে ২৮টি আসনের মধ্যে ২০টি দখল করতে পারে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে রোশন আজ বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীজির জন্য আমার খারাপ লাগছে। কে সি বেণুগোপাল একটি ভাঁড়। সিদ্দারামাইয়া দাম্ভিক আর গুন্ডু রাও চূড়ান্ত ব্যর্থ...তাই এই ফলাফল।’’ বেশ কিছু দিন ধরেই কর্নাটক কংগ্রেসের অন্দরে রোশন কোণঠাসা। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে টিকিট বণ্টন নিয়েও আজ সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘দল কোনও খ্রিস্টানকে প্রার্থী করল না। মাত্র এক জন মুসলিম প্রার্থী। আমি হতাশ, আমাদের শুধু ব্যবহার করা হল।’’ বেণুগোপাল, সিদ্দারামাইয়াদের সম্পর্কে রোশনের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে কর্নাটকের জেডিএস সভাপতি এ এইচ বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘রোশন শেষপর্যন্ত বাস্তবটা বুঝতে পেরেছেন। উনি ভুল কিছু বলেননি। সত্যি কথাটাই বলেছেন।’’ রোশনকে শো-কজ করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। ওই বিক্ষুব্ধ বিধায়ক বলেন, ‘‘আমার কাছে এর কোনও গুরুত্ব নেই। যাঁদের অযোগ্যতা প্রকাশ্যে এনেছি, তাঁরাই শো-কজ নোটিস পাঠিয়েছেন।’’
দলের রাজ্য নেতৃত্বকে রোশনের তোপ জোট সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছে। কর্নাটকে জোট সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা কার্যত সুতোয় ঝুলছে। ২২৫ আসনের বিধানসভায় বিজেপির হাতে ১০৪টি আসন। শাসক জোটের বিধায়ক সংখ্যা ১১৬ (কংগ্রেস ৭৮, জেডিএস ৩৭, বিএসপি ১)। লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে রাজ্যের দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রেও উপনির্বাচন হয়েছে। ওই দুই আসনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে সকলে। জেডিএসের মুখপাত্র তনবীর আহমেদ আজ বলেছেন, ‘‘লোকসভা ভোটের ফলাফল আমাদের অনুকূলে না হলে, জোট সরকার অসুবিধায় পড়তে পারে।’’ সে কথা স্বীকার করছেন কংগ্রেস নেতারাও। সূত্রের খবর, জেডিএসের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে যদি জোটের আসন দশের নীচে নেমে যায় এবং মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে নিখিল যদি মাণ্ড্য থেকে হেরে যান, তা হলে সরকার বাঁচানো যাবে না। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষায় জেডিএস বিজেপি শিবিরেও যোগ দিতে পারে।