নির্বাচনের পরে জোটের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। দাবি রাহুলের। ছবি: পিটিআই।
নির্বাচনের আগে বিজেপির মোকাবিলায় বিরোধীরা একটি অভিন্ন জোট গড়তে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের অধিকাংশ আসনেই বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিক প্রার্থী লড়ছেন। তবে তাতে দমছেন না কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, নির্বাচনের পরে জোটের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। রাহুল বলেন, ‘‘সব বিরোধী দল একটি বিষয়ে একমত। সেটা হল বিজেপিকে সরানো এখন প্রথম ও প্রধান কাজ।’’ সর্বত্র বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে বলেও দাবি করেন রাহুল।
কয়েক মাস ধরে মহড়ার পরেও ভোটের মুখে কোনও নির্বাচনী সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি কংগ্রেস ও অন্য বিজেপি-বিরোধী দল। অনেক দল এ জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপও করছে। যেমন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল এ দিনও দিল্লি ও পঞ্জাবে আসন সমঝোতা না হওয়ার জন্য স্বয়ং কংগ্রেস সভাপতিকে দায়ী করেছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের কোনও বিষয়ই নেই। আমাদের সঙ্গে রাহুল গাঁধীর বৈঠক হয়েছে। সেখানে উনি জোটের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।’’ কেজরী এ কথা বললেও, কংগ্রেস ও আপ নেতারা বলছেন, এখনও জোটের দরজা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। দিল্লিতে ভোটগ্রহণ ১২ মে। ফলে এখনও সমঝোতা হতে পারে। আম আদমি পার্টি সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে দিল্লিতে আসন সমঝোতার পাশাপাশি পঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও আসন দাবি করছেন কেজরীবাল। কংগ্রেস হরিয়ানায় দু’একটি আসন ছাড়তে রাজি হলেও, পঞ্জাবে আপ-কে কোনও আসন ছাড়তে রাজি নয়।
তবে রাহুল বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সারা দেশ বিজেপির বিরুদ্ধে এক হয়েছে। কংগ্রেস না-থাকলেও উত্তরপ্রদেশে শক্ত জোটের মুখে পড়েছে বিজেপি। মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোট হয়েছে। ঝাড়খণ্ডে হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরেও বিরোধীরা জোট বেঁধে বিজেপির মোকাবিলা করছে। তামিলনাড়ু ও কর্নাটকেও দিব্যি জোট হয়েছে। জোট কোথায় হয়নি?’’ রাহুল বলেন— ‘‘সব বিরোধী দল এখন একমত যে, পয়লা কাজ বিজেপিকে বিদায় করা। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে বিজেপিকে ক্ষমতার মসনদ থেকে নামাতেই হবে। দেশকে ফের উন্নয়নের সড়কে তুলে আনতে, দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে, মানুষের হাতে রোজগার দিতে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং অবিচার, অসাম্য ও অস্পৃশ্যতা থেকে রেহাই পেতে বিজেপিকে পরাস্ত করা ছাড়া কোনও পথ খোলা নেই। সারা দেশ বিজেপির বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে।’’ রাহুলের দাবি, নির্বাচনের পরে বিজেপি-বিরোধী দলগুলোর জোট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর বিএসপি এবং অখিলেশ যাদবের এসপি বিজেপি-বিরোধী জোট গড়লেও কংগ্রেসকে বাদ দিয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘ঠিক আছে, জোট তো হয়েছে সেখানে! উত্তরপ্রদেশে নিজেদের সমর্থন ও সংগঠন বাড়াতে কংগ্রেস নিজেদের লড়াই লড়বে।’’