নেতা-বরণ: তেলঙ্গানার জাহিরাবাদের সভায় রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
গরিব, বেরোজগার মানুষের পরে সোমবার মহিলারা ছিলেন রাহুল গাঁধীর পাখির চোখ, সংখ্যায় যাঁরা ভোটারদের প্রায় অর্ধেক। তেলঙ্গানায় নির্বাচনী প্রচারের শুরুতে সকালে জাহিরাবাদ এবং দুপুরে ওয়ানাপার্থিতে সভা করেন কংগ্রেস সভাপতি। নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অভিযোগের পাশাপাশি অর্থনীতিকে ধ্বংস করা এবং চাকরির সুযোগ সঙ্কুচিত করার অভিযোগ তুলেছেন রাহুল। কাল রাতেই তিনি টুইটে জানিয়েছিলেন— কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে সরকারি চাকরিতে যে ২২ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে, ২০২০-র ৩১ মার্চের মধ্যে তা পূরণ করা হবে। আজ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, জিডিপি-র অন্তত ৬% শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করা হবে।
ওয়ানাপার্থির প্রচারসভায় রাহুলের অস্ত্র ছিল প্রস্তাবিত ‘ন্যায়’ প্রকল্পটিই। তিনি বলেন, ‘‘সমাজের সব চেয়ে পিছিয়ে পড়া ২০ শতাংশ পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যে ৭২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে, সেটা পড়বে পরিবারের মহিলাদের অ্যাকাউন্টেই। কোটি কোটি মহিলা অর্থনৈতিক ভাবে স্বয়ম্ভর হবেন।’’ কংগ্রেস সভাপতি ঘোষণা করেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে লোকসভা, রাজ্যসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলিতে ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত তো করা হবেই, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতেও একই সংখ্যক পদে মহিলাদের সংরক্ষণ থাকবে। রাহুল এ দিনও বলেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। কেউ সে টাকা পাননি। কিন্তু তিনি কথা রাখবেন।
জাহিরাবাদের সভাতেও নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন রাহুল। বলেন, ‘‘নোটবন্দি ও ‘গব্বর সিং ট্যাক্স’ (জিএসটি) চাপিয়ে দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন এই প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, বছরে ২ কোটি চাকরি দেবেন। আজ এই জনসভায় এমন কেউ এসেছেন, যিনি এই আমলে কাজ পেয়েছেন?’’ রাহুলের দাবি, বাস্তব চিত্র বলছে— ৪৫ বছরে বেকারির হারে রেকর্ড গড়েছে মোদীর সরকার। যে সময়ে চিন ৫০ হাজার নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, সেই একই সময়ে মোদী ২৭ হাজার কাজের সুযোগ কেড়ে নিয়েছেন। রাহুল দাবি করেন, ‘ন্যায়’ প্রকল্প রূপায়ণের সঙ্গে কংগ্রেস সরকার সকলের জন্য মাসে অন্তত ১২ হাজার টাকা আয় নিশ্চিত করলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। জোয়ার আসবে শিল্প ক্ষেত্রে। দেশে সমৃদ্ধি আসবে। কংগ্রেস সভাপতি অভিযোগ করেন, পাঁচ বছরে দেশের কেবল ১৫-২০ জন শিল্পপতির মঙ্গল করেছেন মোদী। তাঁদের বাকি পড়া সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকার ব্যাঙ্কঋণ তিনি মকুব করে দিয়েছেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তেলঙ্গানায় বিজেপি ও তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) গোপন জোট রয়েছে অভিযোগ করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, টিআরএস ক্ষমতায় এলে রিমোট কন্ট্রোল থাকবে মোদীর হাতেই। টিআরএস নেতা কে চন্দ্রশেখর রাও মুখে মোদীর সমালোচনা করেন, কাজে তাঁকে সাহায্য করেন। নোটবন্দি থেকে জিএসটি— সব সময়ে মোদীকে সমর্থন করেছেন কেসিআর। কাজেই টিআরএস-কে ভোট দেওয়া মানে মোদীকেই ভোট দেওয়া। কংগ্রেসই একমাত্র মোদী আর আরএসএস-কে টক্কর দিতে পারে। ইতিমধ্যেই মোদীর ঘুম কেড়ে নিয়েছে কংগ্রেস।