Online Game Bill

অনলাইন গেমিং নিষিদ্ধ করতে বিল পাশ লোকসভায়! কোটি টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেলের শাস্তির প্রস্তাব

১৩০তম সংবিধান স‌ংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধী সাংসদদের বিক্ষোভের মধ্যেই ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের প্রস্তাবে ধ্বনিভোটে পাশ হয় অনলাইন গেমিং সংক্রান্ত বিল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৫ ১৯:৪৪
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভারতে এ বার নিষিদ্ধ হতে চলেছে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত সমস্ত ধরনের অনলাইন গেমিং। বুধবার এ সংক্রান্ত একটি বিল পাশ হয়েছে লোকসভায়। ‘দ্য প্রমোশন অ্যান্ড রেগুলেশন অব অনলাইন গেমিং বিল, ২০২৫’ নামের ওই বিলে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত অনলাইন গেমের প্রচারের উপরে জরিমানা বসানোর প্রস্তাব রয়েছে।

Advertisement

১৩০তম সংবিধান স‌ংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধী সাংসদদের বিক্ষোভের মধ্যেই ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পরে ধ্বনিভোটে পাশ হয় অনলাইন গেমিং সংক্রান্ত বিলটি। বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত অনলাইন গেমের জন্য তহবিল স্থানান্তর বা সহায়তাতেও বিধিনিষেধ জারির প্রস্তাব রয়েছে নয়া বিলে। গত কয়েক বছর ধরেই ভারতে অনলাইন গেমিং শিল্পকে একটি উদীয়মান ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হচ্ছে। অনলাইন গেমে বাজি ধরার পিছনে প্রতি মাসে ভারতে গড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। তাই গত কয়েক বছরে গেমিং শিল্পে ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে বহু ছোট-বড় সংস্থা।

ফলে এমন আইন কার্যকর হলে ক্ষতির মুখে পড়বে বহু সংস্থা। কাজ হারাতে পারেন দুই লক্ষ মানুষ। শুধু তা-ই নয়, লক্ষাধিক কোটি টাকার বিনিয়োগ ক্ষতির মুখে পড়লে তা থেকে প্রাপ্ত বার্ষিক ২০,০০০ কোটি টাকার জিএসটি আদায়ও হবে না। ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে অনলাইন গেমিংকে ২৮ শতাংশ জিএসটি-র আওতায় আনা হয়েছিল। ফলে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত অনলাইন গেমিং বন্ধ হলে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাবে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি। লোকসভায় এই বিল পাশের ফলে প্রশ্নের মুখে পড়েছে ফ্যান্টাসি স্পোর্টস গেমিং সংস্থাগুলিরও ভবিষ্যৎ। যদিও এর মধ্যে বেশিরভাগ সংস্থারই দাবি, তারা বাজি ধরা, টাকা নয়ছয় করা কিংবা অবৈধ জুয়া খেলার মতো কোনও রকম ‘অবৈধ কার্যকলাপে’ জড়িত নয়।

Advertisement

ফ্যান্টাসি গেমিংয়েও টাকার লেনদেন হয় বটে, তবে ঘুরপথে। এই ধরনের খেলায় প্রথমে অল্প টাকার বিনিময়ে পরিচিত তারকা বা খেলোয়াড়দের নিয়ে তালিকা বানাতে হয়। সেই খেলোয়াড়েরা বাস্তবে কেমন ফল করলেন, তার ভিত্তিতে টাকা লেনদেন হয়। জিতলে লক্ষ লক্ষ টাকার পুরস্কারের হাতছানি থাকে। একে সরাসরি ‘জুয়া’ বলা যায় না। ব্রিটেন, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলিতেও অনলাইন গেমিং খুবই জনপ্রিয়। তবে তা নিয়ে বিস্তর কড়াকড়ি রয়েছে। কেওয়াইসি, বিজ্ঞাপন ও প্রচারের নানা নিয়ম রয়েছে। সে সব মানলে তবেই ব্যবসার লাইসেন্স মেলে।

ফলে অনলাইন গেমিংয়ের উপর সার্বিক নিষেধাজ্ঞা না জারি করে বিকল্প ব্যবস্থাগুলি ভেবে দেখা যেত বলেও মত প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞ এবং বণিক মহলের একাংশ। তবুও কেন এমন পদক্ষেপ? সরকারি সূত্রের খবর, অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই নানা অভিযোগ উঠছিল। বহু মানুষ এই সমস্ত গেমে অংশ নিয়ে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছিলেন। এমনকি, কোনও কোনও সময় ব্যবহারকারীর অজান্তেও টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ে। এই আবহে পাশ হওয়া নতুন বিলে অনলাইন গেমিং পরিচালনা করলে এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং তিন বছর পর্যন্ত জেলের সাজার প্রস্তাব রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement