গাঁধী-পথ: ভোপালে অনশনে শিবরাজ সিংহ চৌহান। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
গাঁধীগিরি বনাম গাঁধীগিরি! দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া শিবরাজ সিংহ চৌহান ভোপালের সরকারি বাংলো ছেড়ে ময়দানে অনশন করছেন গাঁধীর পথে। আর সেই সময়ে শিবরাজের ডাক উপেক্ষা করে দিল্লিতে কৃষকেরা একজোট হয়ে ঘোষণা করলেন, আগামিকাল থেকেই শুরু হবে দেশ জুড়ে আন্দোলন। আর সেই আন্দোলন হবে গাঁধীর অহিংস পথে।
মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে পুলিশের গুলিতে কৃষক মৃত্যুর পর থেকে চাষিদের আন্দোলন দেশ জুড়ে দানা বাঁধতে শুরু করে। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজের গণ্ডি পেরিয়ে কৃষকদের নিশানা এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁদের মূল দাবি দু’টি। এক, কৃষি-ঋণ মাফ। দুই, ফসলের দামের উপরে ৫০ শতাংশ যোগ করে সহায়ক মূল্য স্থির করা। যেটি লোকসভা ভোটের আগে মোদীরও প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু সেখান থেকে পিছিয়ে এসেছে তাঁর সরকার। ভোট-তাড়নায় উত্তরপ্রদেশে কৃষি-ঋণ মাফ করলেও গোটা দেশে তা করতে চান না মোদী। মধ্যপ্রদেশেও কৃষি-ঋণ মাফ সম্ভব নয় বলে সে রাজ্যেরই কৃষিমন্ত্রী আজ জানিয়েছেন।
এই দু’টি বিষয়ে মোদীকে ব্যাকফুটে যেতে দেখেই দেশের প্রায় চার ডজন কৃষক সংগঠন আজ দিল্লিতে পাঁচ ঘণ্টা বৈঠক করে। তামিলনাড়ুর কিছু কৃষক গত কাল থেকে রাজধানীতে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন ফের। মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামীর আশ্বাসে আজ তাঁরা সেই আন্দোলন স্থগিত রেখেছেন। তবে আগামী দিনে তাঁদেরও পাশে পাওয়া যাবে বলেই আশা করছে বৈঠকে হাজির থাকা কৃষক সংগঠনগুলি। ‘গাঁধী পিস ফাউন্ডেশন’-এ ওই বৈঠকে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কাল থেকেই নিজ নিজ রাজ্যে কৃষক আন্দোলন হবে। তবে অহিংস পথে।
অথচ এই কৃষকদের কথা শোনার জন্যই ভোপালের দশেরা ময়দানে বসেছেন শিবরাজ। টুইট করে জানিয়েছেন, কৃষকদের স্বার্থে তিনি জীবন দিতেও প্রস্তুত। মানুষের সমস্যা মেটানো ও ভালবাসা বিলোনোর জন্যেই তিনি বসে আছেন। যা দেখে, কটাক্ষ করেন রাহুল গাঁধী। এক বৃদ্ধাকে পুলিশের লাঠি পেটানোর ছবি দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, এ কোন ভালবাসা বিলোচ্ছে বিজেপি? কংগ্রেসের বক্তব্য, গাঁধী অনশনের মাধ্যমে লড়াই করতেন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। শিবরাজ তো নিজেই সরকার। তিনি কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন? এ কীসের গাঁধীগিরি?
কিন্তু এত সবের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী মোদী এখনও চুপ। বিদেশ সফর সেরে ফিরে এসেছেন তিনি। কৃষক বিক্ষোভে নাজেহাল বিজেপি এখন তাকিয়ে আছে তাঁরই দিকে। যদি কোনও ‘জাদু’ করতে পারেন মোদী!