মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের স্ত্রী অমৃতা।
মাঝ সমুদ্রে চলছে জাহাজ। ডেকের প্রান্তে পা ঝুলিয়ে বসে মাঝবয়সী এক মহিলা। মুহূর্তের অসাবধানতায় ঘটে যেতে পারে ভয়ঙ্কর বিপদ। কিন্তু সে সবে পরোয়া নেই মহিলার। কখনও সেলফি তুলছেন, কখনও বা আপন মনে পা দুলিয়ে চলেছেন। পিছনে দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্মীরাও নিরুপায়। অনুরোধ-উপরোধ ছাড়া কোনও উপায় নেই। কারণ তিনি তো আর আম জনতা নয়, তিনি যে খোদ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী। অমৃতা ফড়নবীশ।
খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশের স্ত্রীকে জোর করে নামাবেন, এমন সাহস আর কোন পুলিশকর্মীর আছে। তাই তাঁরা অসহায়। কিন্তু প্রমোদতরী কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ দু’পক্ষই জানিয়েছে, বিপদসীমা অতিক্রম করে যে জায়গায় চলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী-পত্নী, তাতে যে কোনও সময় বিপদ হতে পারত। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। অমৃতা ফড়নবীশের সমালোচনায় সরব হয়েছে নেটিজেনরা।
শনিবারই দেশের প্রথম প্রমোদ-তরী ‘অ্যাংরিয়া’ চালু হয়েছে মুম্বই ও গোয়ার মধ্যে। বিলাসবহুল এই জাহাজে রয়েছে ছ’টি পানশালা, দু’টি রেস্তোরাঁ, একটি সুইমিং পুল, ডিসকো থেক, রিডিং রুম, স্পা-এর মতো বিনোদনের উপকরণ। এক বারে ৪০০ জন যাত্রী এবং ৭০ জন কেবিন ক্রুর সমস্ত রকম ব্যবস্থা রয়েছে এতে। মুম্বই থেকে গোয়া যেতে সময় লাগবে ১৪ ঘণ্টা।
এই বিনোদন জাহাজেই ছিলেন দেবেন্দ্র ফড়নবীশের স্ত্রী। কিন্তু তিনি সেলফি ও অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় তিনি পৌঁছে যান জাহাজের এক্কেবারে মাথায়। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, তিনি পা ঝুলিয়ে বসে রয়েছেন ডেকের বিপজ্জনক প্রান্তে। কখনও সমুদ্র পিছনে রেখে, কখনও বা জাহাজ ব্যাকগ্রাউন্ডে সেলফি তুলছেন তিনি। বিপদের আঁচ করে নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশকর্মীদের নিষেধ করতেও দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: যোগে যোগাযোগ, কানাডার ক্যাথরিন এখন কালনার টিনের ঘরের বৌমা
কিন্তু সে সবে কর্ণপাত করেননি অমৃতাদেবী। বাধ্য হয়ে পুলিশ-নিরাপত্তারক্ষীরাও পিছনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। তাঁদের সামনেই ফের সেলফিতে মজে যান মুখ্যমন্ত্রী-পত্নী।
গোটা এই পর্বের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনরা অমৃতাদেবীকে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ, কটাক্ষে আক্রমণ শুরু করেছেন। কেউ ‘সেলফি কুইন’, বলে সম্বোধন করেছেন, কেউ বা ‘বিপজ্জনক প্রবণতা’ বলে সাবধান করেছেন।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যার জন্য লাইনে ঝাঁপ, ট্রেন চলে যেতেই উঠে দাঁড়ালেন যুবক!
কখনও রেল লাইনে দাঁড়িয়ে, কখনও পাহাড়ি খাদের কিনারে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ গিয়েছে অনেকের। এ নিয়ে সরকারি তরফে প্রচার, প্রসারও হয়েছে। কিন্তু আটকানো যায়নি এই সেলফি ‘বাতিক’। আর সেই ম্যানিয়া যে কোথায় পৌঁছেছে, তার প্রমাণ মিলল আরও এক বার।