মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ত্রিপুরায় বিজেপি-র জয়কে তাদের সাফল্য বলে মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, এটা সিপিএমের পরাজয়। সেই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, সিপিএম ভোটের আগেই লড়াইটা ছেড়ে দিয়েছিল। আর কংগ্রেস তাঁর কৌশল মেনে লড়াইয়ে নামতেই চায়নি। এই দুয়ের ফাঁকতালেই জিতেছে বিজেপি।
মমতা শনিবার নবান্নে বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় ৫% ভোটের ব্যবধানে বিজেপি জিতেছে। ওরা দেদার টাকা খরচ করেছে। ইভিএম নিয়েও অনেক কীর্তি হয়েছে। বাইরের হাজার হাজার লোক, কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে অনেক কিছু করিয়েছে। কিন্তু সিপিএম কোনও প্রতিবাদ করল না! ওরা আত্মসমর্পণ করেছে।’’ মমতার সন্দেহ, ‘‘সিপিএম কি ভয় পেয়েছিল? হয় চুপ করে থাক, নয় এজেন্সি দেওয়া হবে— এ রকম কিছু কি বলা হয়েছিল? পুরোটাই রহস্যময়।’’ তৃণমূল নেত্রীর এই তত্ত্ব উড়িয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই রহস্য থাকতে পারে। ত্রিপুরায় যাঁরা তৃণমূলে গিয়েছিলেন, তাঁরাই পরে বিজেপি-তে গিয়েছেন। তৃণমূল-বিজেপি যৌথ উদ্যোগের মোকাবিলা বামফ্রন্ট একক ভাবেই করেছে।’’
কংগ্রেসকে দুষে মমতা বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীকে বলেছিলাম, ত্রিপুরায় কংগ্রেস, তৃণমূল আর পাহাড়ের দলগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে লড়াই করি। ওরা করল না। আসন সমঝোতাও করল না। বলেছিলাম, আমরা ১৪টা আসনে লড়তে রাজি। পাহাড়িয়া দলগুলোকে ১৬টা দাও আর তোমরা ৩০টায় লড়। জোট হলে ১৫-২০% ভোট পেতে অসুবিধা হত না। কংগ্রেস বিজেপিকে এত অক্সিজেন কেন দিল?’’ জবাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘ত্রিপুরার কংগ্রেসকে কিনে-বেচে শেষ করেছেন তো উনিই! কেন কংগ্রেস সমঝোতা করবে?’’
মমতার মতে, কেন্দ্র ফোর্স আর সোর্স দিয়ে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলি দখল করে। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘বিপুল টাকা খরচ করেও গুজরাতে বিজেপি ভাল ভাবে জিততে পারেনি। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকেও হারবে। আর বাংলা, ওড়িশা তো দূর অস্ত্। হাওড়াতেই ৩৮ লক্ষের বেশি ভোটার। সুতরাং, ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যের মাত্র ২৫ লক্ষ ভোট জব্দ করেই ১০ কোটির রাজ্য দখল করে নেবে?’’
বিজেপির দিলীপ ঘোষের জবাব, ‘‘রাজস্থান, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশের কোনও ছোট ঘটনার জেরে যদি এখানে সভা-সমাবেশ হতে পারে, তা হলে ত্রিপুরার এত বড় জয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রভাব পড়বে না? নিশ্চয়ই পড়বে। আমরা করে দেখাব।’’