রাষ্ট্রপতি ভবনে বৈঠক শেষে নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই
বিজেপি ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সোমবার দিল্লি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন বিষয়ে বিজেপি ও কেন্দ্রের ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তুলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করুন। গায়ের জোরে নয়।’’
জলপাইগুড়ির বানারহাটে রবিবার একটি গাড়ির ভিতর থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা মিলেছে। গাড়িটি বিহার থেকে অসমের দিকে যাচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। মমতার অভিযোগ, এ ভাবেই হাওয়ালার টাকা, অস্ত্র, গুন্ডা নিয়ে আসছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা থাকায় পুলিশও তল্লাশি করতে পারছে না।
এ বারের দিল্লি সফরে মুখ্যমন্ত্রীর মূল কর্মসূচি জি-২০-এর প্রস্তুতি বৈঠক। সেই জি-২০–এর ‘লোগো’য় পদ্মফুল থাকবে কেন, সেই প্রশ্ন তুলেই তিনি বলেন, ‘‘পদ্ম জাতীয় ফুল হলেও নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দলকে তা দিয়েছে। তাই সেটা ব্যবহার না করে অনেক কিছু জাতীয় রয়েছে, তা ব্যবহার করা যেত।’’ তাঁর মতে, ‘‘বাঘও তো জাতীয় প্রতীক ছিল। ময়ূরও জাতীয় পাখি।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দেশের ব্যাপার যখন রয়েছে, তখন আমরা কিছু বলি না। কারণ, এ সব কথা বাইরে গেলে তা দেশের সম্মানের পক্ষে ঠিক নয়।’’
পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের দিকে ইঙ্গিত করে গুজরাতে ভোটের দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। অনেকটা রাস্তা পায়ে হেঁটে মোদী যে ভাবে ভোট দিতে গিয়েছেন তাকে প্রচার বলেই চিহ্নিত করছে বিরোধীরা। মমতা বলেন, ‘‘এটা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। রাজনৈতিক দল হিসাবে নির্বাচন কমিশনকে মানতে হয় আমাদের।’’ সেই সূত্রেই তিনি আরও বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে, তাতে আমি পুরোপুরি সহমত—নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনেরও একটা পদ্ধতি থাকা উচিত।’’
পদ্ম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন সম্পর্কে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘পদ্ম তো জাতীয় ফুল। এতে অসুবিধা কীসের? পুজোয় তো পদ্মফুল লাগে। তখন কি বিজেপির প্রতীক বলে বাদ দেওয়া হবে? আসলে সব সময়ে আতঙ্কে আছেন, পদ্মই তাঁকে বাংলায় সরকার থেকে উৎখাত করবে!’’
বৈঠক সেরে মঙ্গলবার সকালে অজমেঢ়-পুষ্কর যাওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘‘রেলমন্ত্রী থাকাকালীন আমিই করেছিলাম। পুরো টাকা দিয়েছিলাম প্রকল্পে।’’ ঘটনাচক্রে আজই বাবরি ধ্বংসের দিন। মমতা অবশ্য জানিয়ে দেন, তাঁর এই কর্মসূচিতে অন্য কোনও রকম ভাবনাই নেই। তিনি অজমেঢ় শরিফেও যাবেন, পুষ্করেও যাবেন।