Bombay High Court

‘তুমি কালো, আবার বিয়ে করব’ বলায় আত্মঘাতী স্ত্রী! স্বামীকে মুক্তি দিয়ে বম্বে হাই কোর্ট বলল: এটা প্ররোচনা নয়

কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন বধূ। মৃত্যুর আগে নিজের বাবা-মাকে জানিয়ে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ির হেনস্থার কথা। অভিযোগ, গায়ের রং নিয়ে তাঁকে প্রতিনিয়ত খোঁটা দেওয়া হত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১০:১৩
Share:

শ্বশুরবাড়িতে বধূকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ, স্বামীকে মুক্তি দিল বম্বে হাই কোর্ট। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

স্ত্রীকে গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দিতেন স্বামী। দ্বিতীয় বার বিয়ে করার হুমকিও দিতেন। শ্বশুরবাড়িতে হেনস্থা ও অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে তিনি আত্মঘাতী হন। মৃত্যুর ৩০ বছর পর এই সংক্রান্ত মামলা থেকে স্বামীকে মুক্তি দিল আদালত। বম্বে হাই কোর্ট জানাল, এটা আত্মহত্যায় প্ররোচনা নয়। স্বামী যা করেছেন, তা ঘরোয়া কলহের পর্যায়ে পড়ে। ফৌজদারি হেনস্থা সংক্রান্ত অপরাধ নয়। তাই তাঁকে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন বধূ। মৃত্যুর আগে নিজের বাবা-মাকে জানিয়ে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ির হেনস্থার কথা। শুধু স্বামী নন, তাঁর পরিবারের অন্যেরাও বধূকে হেনস্থা করতেন বলে অভিযোগ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, স্ত্রীকে গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দিতেন যুবক। বার বার বলতেন, স্ত্রীকে তাঁর পছন্দ নয়। অন্যত্র দ্বিতীয় বার বিয়ে করবেন বলেও জানাতেন। এ ছাড়া, পুত্রবধূর রান্নার সমালোচনা করতেন শ্বশুর। বলতেন, ওই রান্না খাওয়াই যায় না।

মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার বাসিন্দা ওই যুবক। ১৯৯৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই সময়ে যুবকের বয়স ছিল ২৩। সাতারার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং স্ত্রীর উপর অত্যাচার এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অপরাধে তাঁকে পাঁচ বছরের কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়। সম্প্রতি বম্বে হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়েছে। বিচারপতি এসএম মোদকের পর্যবেক্ষণ, শ্বশুরবাড়িতে ওই বধূর সঙ্গে যা যা হয়েছিল, তা ঘরোয়া কলহ। অপরাধ নয়। স্ত্রীকে গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দেওয়া, আবার বিয়ের হুমকি ফৌজদারি হেনস্থার আওতায় পড়ে না। এতে ফৌজদারি আইনে শাস্তি দেওয়া যায় না।

Advertisement

বিচারপতি বলেছেন, ‘‘বৈবাহিক জীবনে উদ্ভূত প্রতিটি বিরোধ ফৌজদারি অপরাধ নয়। তখনই তা অপরাধের পর্যায়ে পড়বে, যখন ওই হেনস্থার কারণে বধূর সামনে মৃত্যু ছাড়া আর কোনও বিকল্প থাকবে না। এ ক্ষেত্রেও বধূর উপর নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু এটা সেই ধরনের নির্যাতন নয়, যে কারণে অপরাধ আইন প্রযুক্ত হতে পারে।’’

আদালতের পর্যবেক্ষণ, নিম্ন আদালতে আইনের মৌলিক নীতিগুলি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। মহিলার আত্মহত্যার সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির হেনস্থার সরাসরি কোনও যোগ প্রমাণিত হয়নি। ফলে ওই রায় খারিজ করে অভিযুক্তকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement